নীড় পাতা / উত্তরবঙ্গ / পাবনা / মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন ‘নৌকা মান্নান’

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন ‘নৌকা মান্নান’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঈশ্বরদী:
স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন নৌকা বানিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা জানানো সেই আব্দুল মান্নান। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ গেজেট অধিশাখার প্রজ্ঞাপনে তার নাম প্রকাশ হয়েছে। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পি এম ইমরুল কায়েস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক জানান, সর্বশেষ গেজেটে ঈশ্বরদী পৌর এলাকার সাঁড়া গোপালপুর গ্রামের মরহুম মহব্বত আলীর ছেলে আব্দুল মান্নানের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা জীবনের শেষ সময়ে হলেও স্বীকৃতি পেলেন। আমরা চাই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা সরকারি সুযোগ-সুবিধার আওতায় আসুক।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে আব্দুল মান্নান যুদ্ধ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভুলে তালিকা থেকে তার নাম বাদ পড়ে। তিনি পেশায় একজন রিকশা মেকানিক। তিনি বঙ্গবন্ধুর নৌকার প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে ২৩ বছর ধরে অনেক ‘শখের নৌকা’ তৈরি করেছেন। আর তা বিক্রি করেই তিনি জীবিকা নির্বাহ করছেন। এলাকায় তিনি ‘নৌকা মান্নান’ হিসেবেই পরিচিত।

ঈশ্বরদী পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় একজন সম্মুখসারির মুক্তিযোদ্ধা হয়েও আব্দুল মান্নান ৫০ বছর ধরে স্বীকৃতি পাননি। এটা দুঃখের বিষয়। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি স্বীকৃতি পাওয়ায় এলাকার মানুষ আনন্দিত।

আব্দুল মান্নান বলেন, বিয়ের এক সপ্তাহ পর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। নববধূ রেখে দেশের মায়ায় ঘর ছাড়ি। ঈশ্বরদীর বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন কাজী সদরুল হক সুধা। গ্রুপ লিডার ছিলেন জিয়াউল। দেশ স্বাধীনের পর অস্ত্র জমা দিয়ে রিকশা চালিয়ে, দিন মজুরি করে সংসার চালিয়েছি। এরপর হঠাৎ পেশা বদলে ফেলি। ২২-২৫ বছর আগে শখ করে টুকরো টিন দিয়ে নৌকা বানাই। এরপর থেকে নিয়মিত নৌকা বানাই। তখন থেকে ছোট ছোট নৌকা বানিয়ে সাজিয়ে রাখি নিজের ছোট্ট দোকান ঘরে। নিজের জমিজমা না থাকায় রেলের জমিতে বসবাস করছি।

তিনি আরও বলেন, যখন দেখি কোনো স্বাধীনতা বিরোধী ব্যক্তি সুফল ভোগ করছেন, তখন চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারি না। সাঁড়াগোপালপুরেই তিন থেকে চারজন মুক্তিযোদ্ধা আছেন। তারা সব সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন। আমিও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় নিজেকে ধন্য মনে করছি।

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, সর্বশেষ প্রকাশিত গেজেটে আব্দুল মান্নানের নাম এসেছে। দেরিতে হলেও তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন।

আরও দেখুন

ট্রাক্টরের চাপায় চালকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাটোরের গুরুদাসপুরে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের চাপায় মোঃ বাদল হোসেন (৩০) নামে এক চালকের …