নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / আজ বীর মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলী প্রাং এর ত্রয়োদশ মৃত্যু বার্ষিকী

আজ বীর মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলী প্রাং এর ত্রয়োদশ মৃত্যু বার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আজ বীর মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলী প্রাং এর ত্রয়োদশ মৃত্যু বার্ষিকী। ২০০৭ সালে এই দিনে তার জীবনাবসান হয়। ১৯২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর তৎকালীন বড় হরিশপুর ইউনিয়নের হরিশপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে জন্ম তার। পিতা জমিদার আছির উদ্দিন প্রাং এবং মাতা কাঞ্চন নেছা বেওয়ার জ্যেষ্ঠ ছেলে রমজান আলী প্রাং।

১৯৩১ সালের দিকে মাত্র ১০ বছর বয়সে তার গৃহশিক্ষকের অনুপ্রেরণায় বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে কিশোর কর্মী হিসেবে যুক্ত হন। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ পরে আওয়ামী লীগ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে যুক্ত হন এবং নাটোরে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত, ঘনিষ্ঠ, বিশ্বস্ত ও প্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। তিনি ১৯৫২ সালে মহান ভাষা আন্দোলন ৬৬’র ছয়দফা ৬৯’র গণআন্দোলনে স্বক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নাটোর সদর আসনে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া মননোয়ন স্বেচ্ছায় পরিত্যাগ করে মহানুভবতার পরিচয় দেন এবং বঙ্গবন্ধুর নিকট অন্যের জন্য সুপারিশ করেন।

১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে নাটোরের মুক্তিকামী মানুষদেরকে সংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করেন। তিনি নিজে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে পাকিস্তানী আর্মির অবস্থান চিহ্নিত করে সহ-মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে মানচিত্র ও তথ্য সরবরাহ করেছেন। এই কাজ করতে গিয়ে তিনি হানাদারদের হাতে ধরা পরেন, তারপর নিষ্ঠুর অত্যাচার নির্যাতন ভোগ করে স্রষ্টার অনুগ্রহে অপ্রত্যাশিত মুক্তি লাভ করেন। তিনি একজন ভরাট কন্ঠের অধিকারী সু-বক্তা ও ইতিহাস সমৃদ্ধ রাজনীতিবিদ ছিলেন।

১৯৭৫ সালে ১৫ আগোষ্ট জাতির জনককে স্ব-পরিবারে হত্যার প্রতিবাদ না করায় সতীর্থ নেতা কর্মীদের উপর ক্ষোভ ও অভিমানে রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় হয়ে যান। পরে ১৯৭৮ সালে আওয়ামী লীগ (মিজান) দলে স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্বদেন। তিনি আজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন ও প্রচার করেছেন। মিজানুর রহমান চৌধুরী সামরিক শাসক এরশাদের সাথে সংযুক্ত হলে তিনি স্বক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে আসেন।

রমজান আলী প্রাং তার রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে নাটোরে অনেক ধর্মীয়, সামাজিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় স্বক্রিয় ও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। যেমন- বায়তুল আমান জামে মসজিদ, শের- ই-বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়, আল মাদ্রাসাতুল জামহুরিয়া, রানী ভবানী মহিলা কলেজ, নাটোর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ড্রাট্রিজ, সাকাম সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান উল্লেখযোগ্য।

তিনি পরিবারের উর্দ্ধে সমাজ ও মানুষের প্রতি বেশি দ্বায়িত্বশীল ও সর্বস্ব বিলিয়ে দেওয়া উদার মানসিকতা সম্পন্ন ত্যাগী ব্যক্তি ছিলেন। আজীবন অসাম্প্রদায়িক নির্লোভ এই নেতা ২০০৭ সালের ৯ আগস্ট তাঁর বর্ণাঢ্য অথচ সহজ সরল প্রচার বিমুখ জীবন অবসান হয়।

আরও দেখুন

নাটোরে নানা আয়োজনে মহান মে দিবস পালিত 

নিজস্ব প্রতিবেদক:  জাতির পিতার  প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন দোয়া ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে জেলা প্রশাসকের আয়োজনে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *