নীড় পাতা / উত্তরবঙ্গ / হিলির ক্ষুদেশিল্পী অমিত এর দূর্গা প্রতিমা

হিলির ক্ষুদেশিল্পী অমিত এর দূর্গা প্রতিমা

নিজস্ব প্রতিবেদক, হিলি (দিনাজপুর):
মাত্র ৯ বছর বয়স শিশু কাল থেকে কলেজ জীবনে এসে দূর্গা প্রতিমা তৈরি করে নিজেই ঠাকুর হয়ে পূজো করে আসছে দিনাজপুরের হিলি শ্রী অমিত মানী। অন্যান্য পূজা মন্ডপের সাথে তাল মিলিয়ে নিজ উদ্যোগে প্রতিমা তৈরি করে আসছে সে। উপজেলার সব পুজা মন্ডপে সরকারি অনুদান আসলেও তার মন্ডপে কোন কিছু পৌছায়নি আজও।

অমিত বাবার একমাত্র ছেলে। বাবা অজয় মানী একজন হাইস্কুল শিক্ষক। চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্র থেকে শুরু করে অমিত তার নিজ ধর্মের প্রতিমা তৈরি করে আসছে। বাবার সামান্য বেতনের টাকা দিয়ে এই প্রতিমা তৈরি করে সে। প্রতিটি উৎসবে প্রতিমা তৈরি করতে অমিতের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বাবা অজয় মানীর কষ্ট হলেও ছেলে প্রতিভা দেখে অনেক অভাবের মাঝেও প্রতিমা তৈরির খরচ জোগাড় করেন তিনি।

সীমান্ত এলাকা হিলিতে ২০টি পূজা মন্ডব রয়েছে, অমিতেরটা সহ ২১টি। প্রতি বছর তার মন্ডপের নাম তালিকায় লিখা হলেও কোন সরকারি অনুদান পায়না সে। কর্তৃপক্ষরা শুধু তাকে আশ^াস দিয়ে আসছে। তবে শুধু প্রতিশ্রæতি পেয়ে আসছে অমিত মানী।

অমিত মানীর পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখা যায়, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সব চেয়ে বড় উৎসব শরদীয়া দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরির সকল কাজ শেষ করেছে অমিত। রং তুলির কাজও ইতি মধ্যেই শেষ করেছে সে। আর মাত্র কয়েক দিন বাঁকি, তারপর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব। এখন থেকেই অমিতের নিজ হাতের তৈরি প্রতিমাগুলো দেখতে আসছে অনেকেই।

অমিত মানীর সাথে আলাপ কালে সে বলে ৯ বছর বয়স থেকে শুরু করেছে সনাতন ধর্মের বিভিন্ন প্রতিমা তৈরি করা কাজ। ধমীয় উৎসব ছাড়াও সে সব সময় ঠাকুর তৈরি করে থাকে। ছোট বেলায় বিভিন্ন পূজা মন্ডপে ঘুরে বেড়াতো আর কারিগরদের প্রতিমা তৈরি করা দেখতো সে। মুলত সে ঐসব কারিগরদের কাজ করা দেখে প্রতিমা তৈরি করা শিখেছে। তার ইচ্ছে আমি আরও বড় একজন দক্ষ প্রতিমা তৈরির কারিগর হতে চায়।

কথা হয় অমিতের বাবা অজয় মানীর সাথে, তিনি বলেন, আমার ছেলে অমিত ছোট বেলায় থেকে প্রতিমা তৈরি করে আসছে। যখন অমিত চতুর্থ শ্রেনীতে লিখা-পড়া করতো, তখন থেকে প্রথমে বাড়িতে কাদা-মাটি দিয়ে বিভিন্ন প্রতিমা তৈরি করতো। আমি তা দেখে বুঝতে পারতাম সে একজন ধর্মপিয়াসু এবং নিজ ধর্মের প্রতিমা নিজেই তৈরি করতে চায়। তখন থেকে আমি তার প্রতিমা তৈরি করার সকল সরঞ্জাম এনে দিতাম। ধীরে ধীরে সে নিজেই সব পূজার প্রতিমা তৈরি করে ফেলে। তবে তার প্রতিমা তৈরি খরচ জোগার করতে আমি অনেক সময় হিমশিম খাচ্ছি। যদি প্রতিটি ধর্মীয় উৎসবে সরকারি অনুদান পেতো অমিত, তাহলে আমি উপকৃত হতাম।

এবিষয়ে হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা পুজা কমিটির সভাপতি শ্রী সমন মন্ডল জানান, অমিত একটা প্রতিভা সম্পর্ণ ছেলে। ছোট থেকে সে এই কাজ করে আসছে। প্রতি বছর আমি তার প্রতিমা দেখতে আসি। এই বছর আমি প্রথম পূজা উযাপন কমিটির সভাপতি হয়েছি। তার মন্ডপের জন্য তালিকায় নাম দিয়েছিলাম। হইতো আমাদের ব্যার্থতার জন্য সে কোন অনুদান প্য়ানি। তবে আশ করছি আগামী বছর থেকে তার পূজা মন্ডপের নাম তালিকায় আসবে।

আরও দেখুন

গুরুদাসপুর খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বোরো মওসুমে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা খাদ্য গুদামে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি ধান-চাল সংগ্রহের উদ্বোধন …