নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / হাজারো দর্শনার্থী ও ভক্তবৃন্দের পদচারণায় জমে উঠেছে বুধপাড়া কালি পূজার মেলা

হাজারো দর্শনার্থী ও ভক্তবৃন্দের পদচারণায় জমে উঠেছে বুধপাড়া কালি পূজার মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
হাজারো দর্শনার্থী ও ভক্তবৃন্দের পদচারণায় জমে উঠেছে নাটোরের লালপুর উপজেলার বুধপাড়া কালি পূজা মেলার তৃতীয় দিন। বুধবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে বুধপাড়া কালি মন্দির এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, হাজারো দর্শনার্থী ও ভক্তবৃন্দের পদচারণায় মন্দির এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। শতাধিক স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মেলায়। শিশুদের জন্য নাগর দোলা, হর্স রেস ও রেলওয়ে ভ্রমন ব্যবস্থা রয়েছে মেলায়। লোহার তৈরী দা, কুড়াল, বটি, কাচি, হাসুয়া, কোদালসহ গৃহস্থালী কাজের রকমারি জিনিসপত্র পাওয়া যায়।

বাঁশ ও কাঠের তৈরী নানা আসবাপত্র, কুটির শিল্পের নানা পন্য এবং মিষ্টান্নের সঙ্গে কসমেটিকস সামগ্রীতে সেজেছে মেলার স্টল গুলো। বাহারি পোশাক,কম্বল, শিশুদের বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী, খাবার, বইয়ের দোকান, ফার্নিচার সামগ্রীর দোকান। বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বাড়ি থেকে বিভিন্ন ফল ও মানতের পাঁঠা নিয়ে পূজা মণ্ডপে আসছেন। তাদের স্বাগত জানাতে সামনে-পেছনে আসছে ঢোল বাদকরা। ভক্তরা পূজা মণ্ডপে এসে তাদের নাম ও ফি প্রদান শেষে সঙ্গে আনা বিভিন্ন সামগ্রী কালিকে প্রণাম শেষে অর্পণ করছেন।

পূজা কমিটির সভাপতি মুকুল কুমার সাহা বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের পূঁজারী ছাড়াও দেশ বিদেশী ভক্তবৃন্দ ও সাধু-সন্যাসীদের সমাগম ঘটছে দীর্ঘদিন থেকে। সকলের পদচারনায় অভূতপূর্ব মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। কালীপূজা ও মেলা মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। দেশ-বিদেশের হাজারো ভক্ত ও দর্শকের পদচারণায় ৭ দিনব্যাপী মিলন মেলা প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আগামী ৩১ অক্টোবর সোমবার শেষ হবে।

মন্দির কমিটির উপদেষ্টা শ্রী. গণেশ, চন্দ দাস বলেন এ পূজার প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে পাঠাবলি। আর পাঠাবলি দেখতে সেখানে ভিড় পড়ে যায়। মঙ্গলবার ভোর থেকে পাঠাবলি দেয়া শুরু হয়। পাক-ভারত উপ-মহাদেশের প্রাচীনতম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম ঐতিহ্যবাহী বুধপাড়া কালীমাতা মন্দিরে ৫৩৩তম পুজা কমিটি।

কমিটি সূত্রে জানা যায়, ৫৩৩ বছর আগে নবাবী আমলে বর্গীয় হাঙ্গামায় বর্গীদের অত্যাচারে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের খাগড়া থেকে ৬০ঘর কংস বণিক লালপুরের বুধপাড়ায় এসে বসতি স্থাপন করেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের এই কাঁসা শিল্পীরা কালীপূজা অর্চনার জন্য খড়ের ঘরে একটি মন্দির নির্মান করেন। বাংলা ১৩৩২ সালে জনৈক লাল কেনেডিয়ার স্ত্রী জানকী বাঈয়ের আর্থিক অনুদানে পাকা মন্দির নির্মিত হয়। প্রতি বছর কার্তিক মাসে এখানে কালীপূজা ও মেলা হয়। মন্দিরে পূজা চলাকালীন প্রতিদিন প্রায় শতাধিক পাঁঠা বলি হয়ে থাকে।

লালপুর থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামন বলেন, প্রতিবছরই লালপুরে কালি পূজা উদযাপন হয়ে আসছে। কালিপূজা মেলা শান্তিপূর্ণ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত এ ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ প্রশাসন প্রস্তুত।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম সুলতানা বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে কালি পূজা উদযাপন ও মেলা করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

আরও দেখুন

পুঠিয়ায় প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে রাতের আঁধারে চলছে পুকুর খনন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পুঠিয়ায় রাতের আঁধারে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পুকুর …