শুক্রবার , এপ্রিল ২৬ ২০২৪
নীড় পাতা / Uncategorized / সুদের টাকা নিয়ে বিপাকে শিক্ষকরা, পথে ঘাটে লাঞ্চিত

সুদের টাকা নিয়ে বিপাকে শিক্ষকরা, পথে ঘাটে লাঞ্চিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, লালপুরঃ
নাটোরের লালপুরে কদিমচিলান ইউনিয়নে সুদব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষকরা। এ কারণে নির্দিষ্ট সময় টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সুদ ব্যবসায়ীদের কাছে পথে ঘাটে লাঞ্চিত হতে হচ্ছেন তারা। এছাড়া ঋণের টেনশন আর সুদি কারবারীদের অত্যাচারে শ্রেণীকক্ষের পাঠদানেও মনোযোগ দিতে পারছেন না। বিদ্যালয়ের ভিতরে এসেই তাদের অপমান অপদস্থ করছে সুদ ব্যবসায়ীরা। এসব সুদ ব্যবসায়ীরা সরকার দলীয় বিভিন্ন পোষ্ট ধারী নেতা হওয়ায় ও নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকার ফলে মুখ বুঝেই সকল অত্যাচার সহ্য করতে হয় তাদের।

জানা গেছে এই ইউনিয়নের এক আওয়ামীলীগ নেতার সুদ সিন্টিকেটে পড়ে নিঃশ্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তার রয়েছে একটি নির্দিষ্ট সিন্টিকেট। সংঘবদ্ধ হয়ে তারা সুদের ব্যবসা করেন। কারো কাছে সুদের টাকা তুলতে না পারলে তাদের সংঘবদ্ধ দল তার বাড়িতে গিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে টাকা আদায় করেন। তবে অভিযোগ আছে তাদের ফাঁদে যে একবার পা বাড়ায় সে কখনো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। অধিকাংশ ভুক্তভুগিদের অভিযোগ সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করার পরও তাদের অত্যাচার থেকে বাঁচা যায় না। তাদের দাবী নিঃশ্ব হওয়া না পর্যন্ত চলবেই। টাকা পরিশোধ না করলে স্ত্রী কন্যাদের বিভিন্ন কু প্রস্তাব অশ্লীল ভাষায় কথা বলা ও বাড়ি থেকে গরু বাছুর খুলে নেওয়ার অভিযোগ করেন ভুক্তভুগিরা। তাদের ক্ষপ্পর থেকে রেহায় পায়নি শিক্ষকরাও। তাদের সুদের জালে বন্দী হয়ে সাধারণ মানুষ সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষকের সোনার সংসার ধ্বংস হতেও দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি কদিমচিলান সেই আওয়ামীলীগ নেতা ও সুদ কারবারী মজনুর রহমানের বিরুদ্ধে মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক শিক্ষককে মারধর করে চেক ছিনতাইয়ের মামলা দায়ের করেছেন। ওই শিক্ষক বলেন চেক জালিয়াতি করে মজনু মেকার আমার সাথে চরম বাজে ব্যবহার করেছে। আমি প্রতিবাদ করাই সে আমাকে মারধর করে। সামান্য মেকার থেকে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অবৈধভাবে কোটিপতি বনে গেছেন এই নেতা। প্রায় হাফ ডজন মামলাও রয়েছে তার নামে। বিবাদমান জমি দখল করে বাড়ি নির্মাণ, সরকারী গাছ কর্তন অবৈধ লেদের ব্যবসা সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আছে তার নামে। তার শ্বসুর ও সুমনদী এই এলাকার সব থেকে বড় সুদি কারবারী। এছাড়া এই নেতার নিয়ন্ত্রনে চলে সমস্ত সুদি কারবারীরা। তার জন্য পান নির্দিষ্ট মুনাফা। সম্প্রতি তার এক শিষ্য সুদি ইয়াকুব সুদের টাকার জেরে চাঁদপুর(১) নং উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কান ধরে উঠবস করিয়েছে। ওই শিক্ষক বলেন, আমি ছেলের চাকুরীর জন্য ইয়াকুবের ১ লাখ টাকা নিয়েছিলাম। সুদসহ সব টাকা পরিশোধ করার পরও আরো ৩ লাখ টাকা দাবী করেন ইয়াকুব। সে টাকা দিতে অস্বীকার করলে বিদ্যালয় চত্ত¡রেই আমাকে কান ধরে উঠবস করায় ইয়াকুব। এতে শিক্ষার্থীদের কাছে আমার চরম সম্মানহানী হয়। আমি এখন তাদের কাছে মুখ দেখাতে লজ্জা পাই। এছাড়াও সুদি কারবারীদের ক্ষপ্পরে পড়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা ঋণগ্রস্থ হয়েছেন এক প্রধান শিক্ষক। ডাঙ্গাপাড়া চিলান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা বলেন, ২০১৬ সালের দিকে আমার ভাইয়ের বউ ভাইকে তালাক দিলে সুদি মজনুর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা সুদ নেই। সেই সুদ ই আমাদের কাল হয়ে দাড়িয়েছে। আজ আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি সেই সুদের টাকা পরিশোধ করতে করতে। যতই দেই তবু যেন শোধ হয়না। চাঁদপুর বাজারে আমাদের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো আমার বাবাকে সেই প্রতিষ্ঠানেও যেতে দেইনি সুদি ব্যবসায়ীরা। রাস্তা পথে যেখানে দেখা হতো সেখানেই অপমান অপদস্থ করতো। আমার বাবা সেই দুঃখে স্টোক করেই মারাই গেলেন। অবশেষে সমস্ত যায়গা জমি বিক্রি করে সেই সুদের টাকা পরিশোধ করি। এখন আমরা নিঃশ্ব। এছাড়া ঘাটচিলান গ্রামের অপর একজন শিক্ষক সুদের টাকা দিতে দিতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে আওয়ামীলীগ নেতা মজনুর রহমান তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা।

আরও দেখুন

পরিবর্তন হলো ২৪৭ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম

নিউজ ডেস্ক: শ্রুতিকটূ ও নেতিবাচক অর্থ বোঝায় এমন ২৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা …