নীড় পাতা / জাতীয় / সংলাপের প্রস্তাব নাকচ করলেন প্রধানমন্ত্রী

সংলাপের প্রস্তাব নাকচ করলেন প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রস্তাব আবারও নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির সহিংসতায় যুক্তদের জানোয়ার অভিহিত করে তিনি বলেন, জানোয়ারদের সঙ্গে বসার কথা কারা বলে, প্রশ্নই ওঠে না। দেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কেমন বাংলাদেশ চায়? উন্নত দেশ, নাকি ধ্বংসের দেশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের সর্বশেষ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অধিবেশনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার কন্যা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর অনেক দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, কে কী বলল, কী সমালোচনা করল, এগুলোর ঊর্ধ্বে উঠে সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের বিষয়ে এক টেবিলে আলোচনায় বসতে হবে।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ যখন সারা দেশে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছি, আর তখন আমরা কী দেখলাম, কথা নাই বার্তা নাই নির্বাচন হতে দেবে না। আর আমাকে পদত্যাগ করাবে, ক্ষমতা থেকে হটাবে। এই ঘোষণা দিয়ে গত ২৮ অক্টোবর যে তাণ্ডব বিএনপি করেছে সারা বাংলাদেশে, তাদের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ভিডিও আমি সংসদে তুলে ধরতে চাই। সারা দেশের মানুষ যাতে দেখতে পারে তারা কী করেছে।

’ এরপর সংসদে ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার একটি ভিডিও চিত্র দেখান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে বাংলাদেশ আমরা উন্নত করেছি, বলেছিলাম দিন বদলের সনদ, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আর তার পর এই ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ। আর বক্তব্য দেওয়ার মানসিকতা নেই। এই রকম দৃশ্য, যারা বিচারপতির বাড়িতে আগুন দেয়, এর আগে প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথিও মেরেছে এই বিএনপির নেতারা।

পুলিশের ওপর হামলা, অ্যাম্বুল্যান্সে রোগী যাচ্ছে সেই অ্যাম্বুল্যান্সে আক্রমণ আর কী বীভৎস দৃশ্য। পুড়িয়ে মানুষ হত্যা শুধু নয়, মনে হচ্ছে গোটা দেশটাকেই এরা ধ্বংস করে দেবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশবাসীর কাছে আমি এটাই জানতে চাই, তারা কোন বাংলাদেশ চায়। এই সন্ত্রাসী, এই জঙ্গি, এই অমানুষগুলো—এদের সঙ্গে কারা থাকে। আর তাদের সঙ্গে বসা, এই জানোয়ারদের সঙ্গে বসার কথা কারা বলে? আমার কথা হচ্ছে জানোয়ারেরও একটা ধর্ম আছে, ওদের সে ধর্মও নাই। ওদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ব নাই। ওরা চুরি, লুণ্ঠন, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ছাড়া কিছুই জানে না। ওদের নেতা থেকে শুরু করে সবই তো এভাবে সৃষ্টি। সৃষ্টি যে করেছে সেই জিয়াউর রহমান আমার বাবা, মা, ভাইসহ সব হত্যার সঙ্গে জড়িত। আর খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া তো আমাকেই বারবার হত্যার চেষ্টা করেছে।’ 

সংসদ নেতা বলেন, ‘দেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কোন বাংলাদেশ তারা চায়? উন্নত দেশ নাকি ধ্বংস দেশ। বিএনপি-জামায়াত শুধু ধ্বংসই করতে পারে। বাংলাদেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আর যেন কেউ দেশকে নিয়ে খেলতে না পারে, দেশবাসীর কাছে সেই সহযোগিতা চাই। সাংবাদিকদের যেভাবে মেরেছে, সেটা মেনে নেওয়া যায় না। গাড়ি পুড়িয়েছে, তাদের সহযোগিতা দেব? যারা অগ্নিসন্ত্রাস করে, তাদের ধরিয়ে দিন। যে হাত দিয়ে গাড়ি পোড়াবে সেই হাত পুড়িয়ে দিন।’ তিনি বলেন, ‘দেশবাসীকেই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। এরা মুষ্টিমেয় লোক। উন্নয়ন অব্যাহত থাকুক, মানুষের অধিকার সুরক্ষিত থাকুক, সেটাই চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বারবার আমার ওপর আঘাত এসেছে। এখনো বারবার হামলা হচ্ছে। বিদেশে যাই সেখানেও মারার চেষ্টা করছে। এটা সংসদকে জানিয়ে রাখলাম। দেশের জন্য কাজ করছি। দেশবাসীকে আহ্বান করব, জনগণ শক্তির উৎস, জনগণের শক্তি নিয়েই আমি চলি। আমার শক্তি বাংলাদেশ, দেশের জনগণ। দেশের জন্য কাজ করি। কে কোন দল করে সেটা দেখি না। মানুষকে মানুষ হিসেবেই দেখি। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য। ’৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। কেউ থামাতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে বিএনপি বিরোধী দল নয়। বিএনপি বারবার মানুষকে পোড়ায়, সম্পদ ধ্বংস করে, আমরা দেশের উন্নতি করি, তারা ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। ২৮ তারিখেও তারা পুলিশকে হত্যা করেছে।’ একইভাবে ২০১৩-১৪ সালে নির্বাচনের আগে ও পরে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিএনপির চলমান আন্দোলনের কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব ধরনের ব্যবস্থা যখন আমরা করে যাচ্ছি, তখন কী দেখলাম? কথা নেই, বার্তা নেই, নির্বাচন হতে দেবে না। আর আমাকে পদত্যাগ করাবে। ক্ষমতা থেকে হটাবে। ঘোষণা দিয়ে ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে তাণ্ডব করেছে… এই দৃশ্যগুলো সহ্য করা যায় না। সাংবাদিকরা কী অপরাধ করেছে? যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের পাশে আছি। সাধ্যমতো সাহায্য করে যাচ্ছি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আমরা বাংলাদেশের উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছি।’ এ সময় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।

আরও দেখুন

নাটোরে ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে জখম

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনৈতিক পূর্ব শত্রুতার জেরে নাটোরে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। …