নীড় পাতা / জাতীয় / শরৎ এর রানী “শিউলি”

শরৎ এর রানী “শিউলি”

মোঃ মাহমুদুল হাসান

ষড়-ঋতুর আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ। ছয় ঋতুর প্রত্যেকটা ঋতুরই আছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। এদেশে বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন রকমের ফুল ফোটে। শরৎ ঋতুতে মাঠ-ঘাট, পথ-প্রান্তর ফুলে ফুলে ভরে যায়। শরৎ ঋতুর রঙ রূপ সৌন্দর্যের এক উল্লেখযোগ্য ফুল শিউলি। শিউলি ফুল হচ্ছে নিক্টান্থেস Nyctanthes প্রজাতির একটি ফুল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Nyctanthes arbor-tristi.

এটি দক্ষিণ এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব দেশগুলোতে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও থাইল্যান্ড এলাকাজুড়ে দেখতে পাওয়া যায়। কোন কোন অঞ্চলে শিউলি ফুল শেফালি নামেও পরিচিত। এই ফুল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য ফুল ও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি প্রদেশের প্রাদেশিক ফুল। সুগন্ধিজাতীয় এ ফুলে রয়েছে পাঁচ থেকে সাতটি সাদা বৃতি ও মাঝে লালচে-কমলা টিউবের মতো বৃন্ত। এই ফুল রাতে ফোটে, সকালে ঝরে যায়। সাধারণত এই ফুল শরৎ ও হেমন্তকালে ফোটে। ভারতীয় উপমহাদেশে এই ফুলকে দুর্গা পূজার আগমনি ফুুলের মর্যাদা দিয়েছে।

শরৎ ও হেমন্তের শিশির ভেজা সকালে ঝরে থাকা শিউলি অসম্ভব সুন্দর দৃশ্য তৈরি করে। দিনের আলোয় এই ফুল তার ঔজ্জ্বল্য হারায় বলে শিউলি গাছকে কখনো কখনো Tree of sorrow বা বিষাদ বৃক্ষও বলা হয়। শিউলি ফুলের গাছ কাষ্ঠল, ঝোপাল, গুল্ম ও বহুবর্ষজীবী। এটি ১০ মিটারের মতো লম্বা হয়। বাকল নরম ধূসর এবং গাছের পাতা ছয় থেকে সাত সেন্টিমিটার লম্বা হয়। ফল চ্যাপ্টা ও বাদামি হৃৎপিণ্ডাকৃতি। ফলের ব্যাস দুই সেন্টিমিটার এবং দুই ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি ভাগে একটি করে বীজ থাকে। শিউলি ফুল আমাদের অনেক উপকারে আসে। এই ফুলের বোঁটা শুকিয়ে গুঁড়া করে হালকা গরম পানিতে মেশালে চমৎকার হলুদ রং পাওয়া যায়। সুগন্ধি তৈরিতেও শিউলি ফুল ব্যবহৃত হয়।

শিউলি গাছেরও রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। এর পাতা স্বাদে তেতো। এ জন্য পাতার রস কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে। ঠাণ্ডা ও কাশির জন্যও এ পাতার রস উপকারী। এই পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। এ দুটি উপাদান রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া মাথার খুশকি দূর করতে শিউলির বীজের তেল বেশ উপকারী।

সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী ফজলে রাব্বী বলেন, শিউলি ফুল তার সৌন্দর্যের জন্য বাঙালির কাছে প্রিয় একটি ফুল। কালের বিবর্তনে গ্রাম-গঞ্জ থেকে শিউলি ফুলের গাছ প্রায় হারিয়ে যাওয়ার পথে।

শিক্ষক ও সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান মুক্তা বলেন, এক সময় গ্রাম-গঞ্জে অনেক শিউলি ফুলের গাছ দেখা যেত। সকাল বেলা গাছের নিচে অনেক ফুল পড়ে থাকতো। সেই ফুল কুড়িয়ে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ফুলের মালা তৈরি করত। কিন্তু বর্তমানে শিউলি ফুলের গাছ তেমন আর চোখে পড়ে না। আমাদের সকলের উচিত শরৎ এর রানী শিউলি ফুলকে রক্ষা করা। 

আরও দেখুন

নন্দীগ্রামে সাংবাদিকদের ঐক্য গড়ার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বগুড়ার নন্দীগ্রামে সাংবাদিকদের ঐক্য গড়ার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  শনিবার (১১ মে) …