নীড় পাতা / জাতীয় / লোকসান ও দুর্নীতি বন্ধের উদ্যোগ, অডিট হবে সব বিদ্যুৎকেন্দ্র

লোকসান ও দুর্নীতি বন্ধের উদ্যোগ, অডিট হবে সব বিদ্যুৎকেন্দ্র

নিউজ ডেস্ক:
উৎপাদন ও বিতরণ প্রক্রিয়ায় লোকসানের ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র অডিট করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এজন্য একটি প্রবিধানমালার খসড়া করা হয়েছে। এতে অডিটের উদ্দেশ্য, পদ্ধতির বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে খসড়া প্রবিধানমালার ওপর মতামত দিতে বলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষ পদ্ধতিতে-জেনারেটরে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ এবং ব্যবহৃত জ্বালানির অনুপাত হিসাব করা হবে। পরোক্ষ পদ্ধতিতে- বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের বিভিন্ন অংশকে ধাপে ধাপে বিশ্লেষণ করা হবে। এক্ষেত্রে অডিটর কেন্দ্রের অ্যাকাউন্টস ম্যানুয়াল ও বাজেট খতিয়ে দেখবে। সম্পত্তির দলিলপত্র, অবচয়, সাধারণ ও সহায়ক খতিয়ান, বহিঃস্থ স্বাধীন নিরীক্ষা প্রতিবেদন ও কার্যপত্র পর্যালোচনা করবে। অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন, চালান ও সম্পত্তির তালিকা, মাসিক অথবা ত্রৈমাসিক পরিচালনাগত/আর্থিক প্রতিবেদন এবং ট্রায়াল ব্যালেন্স, সাংগঠনিক চার্ট, বেতন রেকর্ড এবং সম্পত্তির কর বিবরণী যাচাই করবে। এক্ষেত্রে অডিটর উৎপাদন ব্যয়ের বিভিন্ন উপাদান যেমন অবচয়, জ্বালানি ব্যয়, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচের হিসাব করবে। একই সঙ্গে ব্যয়ের যথার্থতা পরীক্ষা করবে।

অডিটরের যেসব বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে সেগুলো হচ্ছে-বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের অপারেশন, রক্ষণাবেক্ষণ; পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় প্রতিবেদন প্রণয়নে দক্ষ হতে হবে। কেন্দ্রের ইন্সট্রুমেন্টেশন, কন্ট্রোল ও মিটারিং; বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্য সম্পাদনের মূল সূচকগুলো নির্ধারণ করতে হবে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রণয়ন; কেন্দ্রের দক্ষতা এবং সক্ষমতার আন্তর্জাতিক মানদণ্ড; এনার্জি অডিট পরিচালনা করা এবং আর্থিক পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

খসড়া প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, যুক্তিসঙ্গত কারণে স্বতন্ত্র এনার্জি অডিটর নিয়োগ করা সম্ভব না হলে বিইআরসি নিজস্ব কর্মকর্তাকে অডিট করার জন্য নিয়োগ দিতে পারবে। এছাড়া ইউটিলিটিগুলোকে তার নিজস্ব জনবল দ্বারা কেন্দ্রগুলোর অডিট করার পরামর্শ দিতে পারবে। এক্ষেত্রে কমিশন বা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তাকে নিরীক্ষা শেষ করে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

কেন এনার্জি অডিট করা হবে তাও প্রবিধানমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত লোকসানের ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের দক্ষতা উন্নয়ন; অক্সিলিয়ারি ব্যবহার হ্রাস এবং দক্ষ পরিচালনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করা। উন্নত পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা ও অনুশীলনের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্যতা এবং প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করা। ইন্সট্রুমেন্টেশন ও মিটারিংয়ের ত্রুটিগুলি চিহ্নিত ও সংশোধনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা। এছাড়া আর্থিক শৃঙ্খলা এবং ব্যয় যুক্তিযুক্তকরণের ফলে আর্থিক সক্ষমতার উন্নয়ন এবং গ্রিন হাউজ গ্যাসের নির্গমন হ্রাস করা অডিটের মূল উদ্দেশ্য।

কনজু্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম যুগান্তরকে বলেন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে রেন্টাল ও কুইক রেন্টালসহ শতাধিক প্রকল্প উৎপাদনে আনা হয়। এগুলো থেকে মানসম্মত বিদ্যুৎ মেলেনি। চাহিদা না থাকায় এসব কেন্দ্র প্রায়ই বন্ধ থাকে। বসে বসে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে। আবার সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রেখে বেসরকারি কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে। এতদিনে ব্যয়বহুল এসব প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসার কথা থাকলেও নানা অজুহাতে রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের চুক্তি বারবার নবায়ন করা হচ্ছে। অডিটর নিয়োগ করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।

আরও দেখুন

বাগাতিপাড়ায় সেরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী নির্বাচিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাটোরের বাগাতিপাড়ায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪ উপলক্ষে উপজেলা পর্যায়ে সেরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত …