নীড় পাতা / আইন-আদালত / লালপুরে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনে জড়িতদের খুঁজে বের করতে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

লালপুরে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনে জড়িতদের খুঁজে বের করতে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ


নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনে কারা জড়িত তা খুঁজে বের করতে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে নাটোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত লালপুরের বিচারক আবু সাঈদ, পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নাটোরকে এই নির্দেশ দেন। এছাড়া লালপুরের আরও অন্য কোন নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হলে তা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ৫জুনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতের পেশকার রাজু আহমেদ।

আদেশের বরাত দিয়ে পেশকার রাজু আহমেদ জানান, গত ২৯ মার্চ বিভিন্ন মিডিয়ায় নাটোরের লুট হচ্ছে পদ্মার লাখ লাখ টাকার বালু’ শিরোনামে সংবাদ প্রচার হয়। সংবাদে প্রভাবশালীরা প্রতিদিন অন্তত ৭০টি ড্রাম ট্রাকে করে বালু নিয়ে যাচ্ছে। বালু পরিবহনের জন্য চরের কৃষি জমি নষ্ট করে ৪কিলোমিটার লম্বা রাস্তাও বানানো হয়েছে। বালু উত্তোলনের কারনে আগামী বর্ষায় কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলিন হওয়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের। বনপাড়া ঠিকাদার শরীফুল ইসলাম ও মতিউর রহমান ওরফে মতি বাঙ্গাল অবৈধভাবে বালু উত্তোলণ করছে মর্মে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এভাবে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। পরিবর্তন হতে পারে নদীর গতিপথও। এছাড়া ১০ এপ্রিল বিভিন্ন ওয়েব সাইটে ‘নাটোরে পদ্মা নদীতে অবাধে বালু উত্তোলন, নীরব প্রশাসন’ এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। রাতের আধারে দিনের পর দিন বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালীরা। কখনও কখনও সরকারি প্রকল্পে বালু ভলাটের নাম করে বালু লিজ ছাড়াই পদ্মা নদী থেকে লাখ লাখ টাকার বালু লুট করে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা। এছাড়া রিজভী কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নবীনগর গ্রামে নদীর তীর রক্ষাবাধের নিচে ফসলি জমি থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই গত দেড় মাস ধরে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলণ করছেন বনপাড়ার ঠিকাদার আব্দুল্লাহ। আর এ বালু উত্তোলনে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন লালপুরের ঠিকাদার শরিফুল ইসলাম এবং জেলা পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান। সংবাদ দুটি বিশ্লোষণ করে স্বপ্রণোদিত হয়ে আদালত আমলে গ্রহন করেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে কারা বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত তা খুঁজে বের করার জন্য পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। এছাড়া তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তকালে আসামীদের সনাক্তকরণ, সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ, ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র ও সুচিপত্র প্রস্তুতের পাশাপাশি অবৈধ বালু উত্তোলনের কাছে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি পাওয়া গেলে তা জব্দ করার নির্দেশ দেন। আদেশে নাটোরের লালপুরের ওপর দিয়ে বহমান অন্য যেকোন নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলণ করা হলে তা বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

পিবিআই পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন বলেন, আদালতের আদেশের কপি এখনও হাতে পাইনি। আদেশের কপি হাতে পেলে তদন্ত কাজ শুরু করা হবে।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী বালু উত্তোলনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, আদালতের আদেশ দু একদিন পর হাতে পেতে পারি। আদেশ পাওয়ার পর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আরও দেখুন

পুঠিয়ায় প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে রাতের আঁধারে চলছে পুকুর খনন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পুঠিয়ায় রাতের আঁধারে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পুকুর …