শনিবার , এপ্রিল ২৭ ২০২৪
নীড় পাতা / খেলা / ক্রিকেট / রূপকথার ২৫ বছর!

রূপকথার ২৫ বছর!

নিউজ ডেস্কঃ

১৯৯৭ সালের ১৩ এপ্রিল। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অবিস্মরণীয় একটি দিন। যেদিন বাংলাদেশ ক্রিকেটের আকাশে উঠেছিল নতুন সূর্য। এই দিনে আইসিসি ট্রফি জয়ের পরই আসলে বদলে যেতে থাকে বাংলাদেশের ক্রিকেট। এরপর একটু একটু করে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে আজকের এই অবস্থান!

প্রতি বছর ১৩ এপ্রিল আসলেই বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমিদের স্মৃতিপটে ফুটে উঠে ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফির ছবি। জীবন্ত হয়ে উঠে হাসিবুল হোসেন শান্ত ও খালেদ মাসুদ পাইলটের বুনো উল্লাস। দুই হাত উঁচু করে মাঠে ছুটে বেড়ানো পাইলট-শান্ত’র সেই ছবি এখনো বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় প্রতীক। যদিও দুই দিন ব্যাপি ওই ফাইনাল ম্যাচের উৎসব শুরু হয় ১২ এপ্রিল থেকেই। মূলত কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হলেও বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ ব্যাটিং করে রিজার্ভ ডেতে, ১৩ এপ্রিল।  

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের কিলাত ক্লাব মাঠে মরিস ওদুম্বে, স্টিভ টিকোলো, টনি সুজি আর কেনেডি ওটিয়ানোর কেনিয়াকে হারিয়ে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছিলেন আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন, আমিনুল ইসলাম, খালেদ মাহমুদ, খালেদ মাসুদ, নাঈমুর রহমান, মোহাম্মদ রফিক, সাইফুল ইসলাম আর হাসিবুল হোসেনরা শান্তরা। কেনিয়ার বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ২ উইকেটে  জিতে বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

শেষ দিকে জয়ের জন্য বাংলাদেশের ১ বলে প্রয়োজন ছিল ১ রান। স্নায়ুক্ষয়ী সে মুহূর্তে বোলার ছিলেন কেনিয়ান পেসার টনি সুজি। স্ট্রাইকে হাসিবুল হোসেন। অপর প্রান্তে খালেদ মাসুদ পাইলট। শেষ বলটি ছোড়ার আগে উইকেটের মাঝখানে দাঁড়িয়ে দুই ব্যাটসম্যান কী যেন আলোচনা করছিলেন। হয়তো কথা হচ্ছিল- ‘বল ব্যাটে লাগুক আর নাই লাগুক আমরা দৌড়ে প্রান্ত বদল করে নিব।’ বাংলাদেশ যখন এই পরিকল্পনায় ব্যস্ত, তখন  মস্ত বড় ভুল করে ফেললো কেনিয়া। তাদের ধারণা ছিল শেষ বলে দুই রান লাগবে। কিন্তু ডি/এল মেথডে যেটা টার্গেট সেটাই ছুঁতে হয়। বাংলাদেশের টার্গেট ছিল ১৬৬। আর কেনিয়ানরা ভেবেছিল বৃষ্টিতে তাদের স্কোর ছোট হয়ে ১৬৬ হয়েছে। বাংলাদেশকে জিততে করতে হবে ১৬৭। এই ভুল ভাবনাই কেনিয়াকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়।

টনি সুজির করা বলটি লেগ সাইডে গেলে ব্যাটে বলে সংযোগ করতে পারেননি শান্ত। তার প্যাডে লেগে বল চলে যায় শর্ট ফাইন লেগে। কিপার কেনেডি ওটিয়ানোর তালুবন্দি হওয়ার আগেই দুই ব্যাটসম্যান প্রান্ত বদল করে ফেলেন। সিঙ্গেলস পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসিবুল ছুটলেন মাঠের পাশে তাবু খাটানো অস্থায়ী ড্রেসিং রুমের দিকে। ড্রেসিংরুমে বসে থাকা ক্রিকেটার, কোচ, ম্যানেজার, বোর্ড কর্মকর্তা, ঢাকা থেকে যাওয়া বিভিন্ন ক্লাব কর্মকর্তা, সাংবাদিক আর প্রবাসী বাঙালিরা তাৎক্ষণিক এই আনন্দে শামিল হলেন।

দেশের মাটিতেও তখন রাজ্য জয়ের আনন্দ! এই আনন্দ ‍পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে বেশিক্ষণ সময় লাগেনি। এই আনন্দকে উপলক্ষ করেই বাংলাদেশের ক্রিকেট এগিয়ে গেছে একটু একটু করে। হাসিবুল, খালেদ মাসুদ, রফিক, খালেদ মাহমুদ, সাইফুল, মিনহাজুল, আমিনুল ও আকরাম, নাইমুর ও এনামুল ও আতহারদের হাত ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের নবজাগরণ হয়েছিল। তাদের উত্তরসূরী হাবিবুল বাশার, আশরাফুল, রাজ্জাক, আফতাব, মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিকরা বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ক্রিকেট বিশ্বে! পরের প্রজন্ম হয়তো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তকমা উপহার দেবে বাংলাদেশকে। যেমনটি এরই মধ্যে করে দেখিয়েছে যুবারা।

আরও দেখুন

নন্দীগ্রামে পুরোদমে চলছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই

নিজস্ব প্রতিবেদক: বগুড়া জেলার শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত নন্দীগ্রাম উপজেলা। এখন এই উপজেলায় পুরোদমে চলছে …