নীড় পাতা / উন্নয়ন বার্তা / মুক্তিযুদ্ধের নতুন ৯ প্রকল্পে বিশেষ অগ্রাধিকার

মুক্তিযুদ্ধের নতুন ৯ প্রকল্পে বিশেষ অগ্রাধিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিশেষ অগ্রাধিকার পাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের নতুন ৯টি উন্নয়ন প্রকল্প। এর মধ্যে ৬টি প্রকল্প রয়েছে উচ্চ অগ্রাধিকারে, মধ্যম অগ্রাধিকারে একটি এবং নিম্ন অগ্রাধিকারে আছে দুটি প্রকল্প। অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে প্রকল্পগুলোকে পর্যায়ক্রমে গুরুত্ব দেয়া হবে। এগুলো বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬৪৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অগ্রাধিকার পুনর্নির্ধারণ করে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্তির অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এক্ষেত্রে কেন এসব অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে- এর ব্যাখ্যাও দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (পরিকল্পনা) ড. মো. মাহমুদুর রহমান রোববার যুগান্তরকে বলেন, নতুনভাবে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা প্রকল্পগুলো যাতে বাস্তবায়ন পর্যায়ে সিস্টেমিক কোনো জটিলতায় না পড়ে সেজন্য আমরা কাজ করছি। তবে ভূমি অধিগ্রহণসহ বাস্তবভিত্তিক কিছু সমস্যা দিতে পারে যেগুলো হয়তো মন্ত্রণালয়ের হাতে নাও থাকতে পারে। আমরা যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে সব সময়ই সচেষ্ট থাকছি।

উচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ’ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে। এ প্রকল্পটির বিষয়ে অগ্রাধিকার পুনর্নির্ধারণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পের পরিবর্তিত প্রকল্প হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) প্রক্রিয়াকরণের জন্য গত ২০ অক্টোবর পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় সারা দেশে ১৪ হাজার বীর নিবাস তৈরি করে দেয়া হবে। এছাড়া ‘মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। প্রক্রিয়াকরণ শেষে অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে।

এ প্রকল্পের বিষয়ে মুক্তিযুক্ত মন্ত্রণালয় বলেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে অননুমোদিত তালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত ছিল। চলতি অর্থবছরও রয়েছে। এটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অন্যতম অগ্রাধিকার প্রকল্প। এর খসড়া ডিপিপি তৈরি হয়েছে। গত ৭ জুলাই ডিপিপি পর্যালোচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে যাচাই কমিটির সভাও অনুষ্ঠিত হয়।

ওই কমিটির সিদ্ধান্ত মতে প্রকল্প দলিল সংশোধনের কাজ চলছে। গত ১৯ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। এরপর একটি পর্যালোচনা সভায় হয়েছে।

উচ্চ অগ্রাধিকারে থাকা ‘মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্যানোরমা নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প দলিল প্রস্তুত’ (কারিগরি সহায়তা) প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এটির ওপর গত ৭ অক্টোবর বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (এসপিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিএপিপি (কারিগরি প্রকল্প প্রস্তাব) পুনর্গঠনের কাজ চলছে।

শিগগিরই পুনর্গঠিত টিএপিপি প্রক্রিয়াকরণের জন্য পরিকল্পনা কমিশনের পাঠানো হবে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন’ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে।

ইতোমধ্যে প্রকল্পটি নিয়ে যাচাই-বাছাই কমিটির সভা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে জনবল অনুমোদন পেয়েছে। ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডিপিপি পুনর্গঠনের কাজ চলছে। ‘বীরকণ্ঠে বীরগাথা’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রক্রিয়াকরণ শেষে অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রকল্পটির ওপর গত ১৫ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি পর্যালোচনা সভা হয়। ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনের পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ‘মুক্তিযুদ্ধ ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কথা। ডিপিপি তৈরির করা চলছে। এখনও পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়নি। তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যেই ঢাকায় জমি পাওয়া গেছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মধ্যম অগ্রাধিকারে রয়েছে ‘বিভাগ বা জেলা পর্যায়ে স্মৃতিসৌধ বা জাদুঘর নির্মাণ’ প্রকল্পটি। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে। প্রকল্পটির ডিপিপি তৈরির কাজ চলছে। প্রকল্পের জমি বরাদ্দের বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেয়া হয়েছে।

নিম্ন অগ্রাধিকারে রয়েছে ‘ঘৃণাস্তম্ভ ও টর্চারসেলের রেপ্লিকা নির্মাণ’ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৫০ কোটি টাকা। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে। প্রকল্পটির খসড়া ডিপিপি তৈরির কাজ চলছে। এছাড়া ‘মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্যানোরমা নির্মাণ (বিনিয়োগ)’ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০০ কোটি টাকা। অনুমোদন পেলে ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে।

আরও দেখুন

নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে বিক্ষোভ মিছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের চলমান মৌসুমি জনবল থেকে স্থায়ীকরণ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার এবং সরকার …