নীড় পাতা / জাতীয় / বদলে গেছে বিলুপ্ত ছিটমহলগুলো

বদলে গেছে বিলুপ্ত ছিটমহলগুলো

নিউজ ডেস্ক:
ছিটমহল বিনিময়ের সাত বছরে উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ছিটমহলগুলো। যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তাসহ নাগরিক অধিকার ফিরে পাওয়ার আনন্দ বিলুপ্ত ছিটমহলের ঘরে ঘরে। তবে শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান ও ৬৮ বছরের বঞ্চনা ঘোচাতে চাকরিক্ষেত্রে বিশেষ কোটা চায় বাসিন্দারা। আর বিনিময়ের দিনটিকে জাতীয়ভাবে ছিটমহল স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি তুলেছে পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী।

আজ আনন্দ সমাবেশ শেষে এই দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেবে তারা।

২০১৫ সালের ৩১ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে (১ আগস্ট) ভারত-বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় হয়। উৎসবমুখর পরিবেশে ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ও বাংলাদেশের ভেতরে থাকা ভারতের ১১১টি ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে ঘুচে যায় অর্ধলক্ষ মানুষের দীর্ঘদিনের বন্দিদশা।

বিলুপ্ত সর্ববৃহৎ ছিটমহল কুড়িগ্রামের দাসিয়ারছড়া। এক হাজার ৬৪৩ একরের দাসিয়ারছড়াসহ কুড়িগ্রামের বিলুপ্ত ১৮টি ছিটমহলে বাস্তবায়িত হয়েছে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প। একসময়ের অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ এখন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। অলিগলিতে পিচঢালা পথ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সামাজিক নিরাপত্তা, যুব প্রশিক্ষণ, ভূমির সমস্যা সমাধান আর বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে ঘুচে গেছে দীর্ঘদিনের বঞ্চনা। প্রায় ১০ হাজার লোকসংখ্যার দাসিয়ারছড়ায় প্রায় দুই হাজার পরিবারকে বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি, নিরাপদ স্যানিটেশন, তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ব্যাপকভাবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু করা হয়। যুব প্রশিক্ষণের জন্য আইসিটি সেন্টার স্থাপন করা হয়। অবকাঠামো উন্নয়নের অংশ হিসেবে ২৬ কিলোমিটার পাকা সড়ক ও পাঁচটি সেতু, মসজিদ-মন্দির সরকারি খরচেই নির্মাণ করা হয়। সড়কের দুই পাশে লাগানো বাসকগাছ দিয়েছে বাড়তি সৌন্দর্য।

ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি দাসিয়ারছড়া ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ‘অল্প সময়ে ছিটমহলের অভূতপূর্ব উন্নয়ন শুধু ছিটমহলবাসীকে বিস্মিত করেনি, বিশ্বের বুকে অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ’ সমন্বয়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, ‘আমাদের সব সমস্যা একে একে সমাধান হয়ে যাচ্ছে। আমরা অনেক খুশি। ’ কালিরহাটের বাসিন্দা হাছিমুদ্দিন জানান, আগে অসুস্থ হলে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হতো। এখন সেই সব কষ্টের দিন শেষ হয়েছে।

‘আমরা আলাদিনের চেরাগের মতোই সব পেয়েছি’

সরকারের সব দপ্তরের সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচিতে কয়েক বছরেই বদলে যায় পঞ্চগড়ের সব (৩৬টি) ছিটমহল। প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দার সবাই নাগরিক সেবাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেতে শুরু করে। গত সাত বছরে বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কলেজ, মাদরাসাসহ ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। যারা পরিচয় গোপন করে পড়ত বাংলাদেশের কোনো স্কুল-কলেজে, তারা এখন বাড়ির পাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই পড়তে পারছে। বিনা মূল্যে বইসহ বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তাদের। কারিগরি ও তথ্য-প্রযুক্তি শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে তরুণদের। প্রায় সব কাঁচা রাস্তা পাকা করা হয়েছে। একসময়ের বিচারবঞ্চিতরা এখন আইনি সেবা নিতে পারছে সহজেই। সেতু, কালভার্ট, পোস্ট অফিস, কমিউনিটি সেন্টার, কমিউনিটি ক্লিনিক, স্যানিটেশন, তথ্য-প্রযুক্তি প্রশিক্ষণকেন্দ্রসহ বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ঘরে ঘরে। সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার আওতায় আনা হয়েছে নাগরিকদের। আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় ৩৫০ ভূমিহীন পরিবারকে একক গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এসব কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই বাসিন্দাদের। অবশ্য অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি।

বিলুপ্ত গাড়াতি ছিটমহলের বাসিন্দা মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা আলাদিনের চেরাগের মতোই সব পেয়েছি। 

আরও দেখুন

নাটোরে ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে জখম

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনৈতিক পূর্ব শত্রুতার জেরে নাটোরে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। …