নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / বড়াইগ্রামে ঝড়ে অসহায় শতাধিক শামুকখোল পাখি রান্না করে খাচ্ছে গ্রামবাসী

বড়াইগ্রামে ঝড়ে অসহায় শতাধিক শামুকখোল পাখি রান্না করে খাচ্ছে গ্রামবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রামঃ

নাটোরের বড়াইগ্রামে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ঝড়ো হাওয়ায় মাটিতে আছড়ে পড়া শতাধিক শামুকখোল পাখি ধরে নিয়ে ভুড়িভোজ করেছে স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার বাজিতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বাতাসের তোড়ের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে প্রায় শ খানেক পাখি মাটিতে পড়ে গেলে ভোরের দিকে গ্রামবাসী ধরে নিয়ে জবাই করে রান্না করে পাখিগুলো। এ ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় পাখিপ্রেমীরা।

বাজিতপুর গ্রামের কলেজ শিক্ষক মহসিন আলী বলেন, তিন-চার মাস ধরে গ্রামের বটতলা মোড়ের পাশের তিনটি শিমুল গাছে আস্তানা গড়ে শতাধিক শামুকখোল পাখি। দিনের বেলায় পাখিগুলো আশপাশের বিলে খাবার খেয়ে রাতে এসব গাছে এসে আশ্রয় নিত। এর মাঝে অনেকেই পাখিগুলো শিকার করার চেষ্টা করেছেন। তবে গ্রামের তরুণদের বাধার কারণে তাদের চেষ্টা সফল হয়নি। কিন্তু ঝড়ের সুযোগে কিছু লোভী মানুষের কারণে শেষ রক্ষা হলো না।

তিনি আরো জানান, বুধবার রাত থেকে ঝড়ের তাণ্ডবে পাখিগুলো এক এক করে মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় সুযোগসন্ধানী লোকজন পাখিগুলো ধরে বাড়িতে নিয়ে যান। মাংস হিসেবে রান্নার জন্য কেটেকুটে পরিষ্কার করা হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় পাখিপ্রেমীরা ছুটে যান বাড়ি বাড়ি। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে যায়। অনেকেই রান্নার জন্য এসব পাখির মাংস চুলাতে চড়িয়েছেন। পরে পাখিগুলোর আশ্রয় নেয়া গাছগুলোর কাছে গিয়ে আর কোন পাখি দেখা যায়নি।

স্থানীয় তরুণ উদ্যোক্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি নিজেসহ গ্রামের অনেকেই এসব অতিথি পাখির ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এতে বিভিন্ন গ্রাম থেকে পাখিপ্রেমী লোকজন এগুলো দেখার জন্য আসতো। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আম্পান সব শেষ করে দিলো।

বাজিতপুর গ্রামের বাসিন্দা আকরাম হোসেন বলেন, পাখিগুলোর প্রতিটি ২-৩ কেজি করে ওজন ছিল। পাখিগুলোর প্রতি গ্রামের কিছু লোকের আগে থেকেই লোভ ছিল। ঝড়ের সময় মানুষ যখন নিজেদের জানমাল নিয়ে ব্যস্ত, তখন ওইসব লোকজন পাখিগুলো ধরে নিয়ে কেটেকুটে রান্নার উপযোগী করে ফেলে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আফজাল হোসেন সাবু বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। তবে ধরে নেয়া পাখির সংখ্যা ৫০-৫৫ টির মত হবে। গ্রামের লোকজনের সচেতনতার কারণে এতোদিন পাখিগুলো ধরতে পারেনি, কিন্তু এবার আর পাখিগুলো বাঁচানো গেল না।

এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম থানার ওসি দিলীপ কুমার দাস বলেন, বাজিতপুরে গ্রামে অতিথি পাখি শামুকখোল থাকার বিষয়টি জানা ছিল না। এ রকম ঘটনা যেন আর না ঘটে সে জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও দেখুন

পুঠিয়ায় প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে রাতের আঁধারে চলছে পুকুর খনন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পুঠিয়ায় রাতের আঁধারে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পুকুর …