নীড় পাতা / উন্নয়ন বার্তা / পার্বত্য জেলাগুলো আর পিছিয়ে পড়া জনপদ নয়: প্রধানমন্ত্রী

পার্বত্য জেলাগুলো আর পিছিয়ে পড়া জনপদ নয়: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র শান্তি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির পিতার সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৩তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিনের জাতিগত হানাহানি বন্ধের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই অঞ্চলের দীর্ঘদিনের সংঘাতময় পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর কোনো তৃতীয়পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই আওয়ামী লীগ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে এই ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বন্ধ হয় দীর্ঘদিনের জাতিগত হানাহানি। অনগ্রসর ও অনুন্নত পার্বত্য অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় শান্তি ও উন্নয়নের ধারা। এসময়, পার্বত্য শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করেন শেখ হাসিনা।

পার্বত্য জেলাগুলোর নৈসর্গিক সৌন্দর্য সমুন্নত রাখা ও পর্যটন শিল্পের প্রসারে সরকারের নানামুখী উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে আজ পার্বত্য জেলাগুলো কোনো পিছিয়ে পড়া জনপদ নয়। সরকার পার্বত্য এলাকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছে। দুর্গম এলাকায় এখন রাস্তা নির্মাণ হয়েছে। মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা ও শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার জন্য টেকসই সামাজিক সেবার পাশাপাশি সরকার পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ১০ হাজার ৮৯০টি পরিবারের মধ্যে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করেছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার শান্তিচুক্তির আলোকে পার্বত্য অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন করেছি। এ অঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, অবকাঠামো, মোবাইল নেটওয়ার্কসহ সব খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এসময়, ঢাকার বেইলি রোডে পার্বত্যবাসীর স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে প্রায় দুই একর জমির ওপর ১৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি শৈল্পিক ও নান্দনিক কমপ্লেক্স নির্মাণের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

বলেন, ‘আমরা রাঙামাটিতে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি। ভূমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বোর্ডের কার্যক্রম আরো গতিশীল ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন-২০১৪ প্রণয়ন করা হয়েছে।

পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম আধুনিকতার ছোঁয়া বিবর্জিত পশ্চাৎপদ পার্বত্য জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূলধারায় ফিরিয়ে আনেন। পার্বত্যবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে নানামুখী কর্মসূচি নেন। আঞ্চলিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীদের সম-সুযোগের ব্যবস্থা নেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালের জুন মাসে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীদের জন্য সুনির্দিষ্ট আসন সংরক্ষণের জন্য নির্দেশনা দেন।

পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৩তম বর্ষপূর্তি আজ। ১৯৯৭ সালের এই দিনে সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারের পক্ষে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালিন চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লা। অন্যদিকে ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। শান্তিচুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের সংগ্রামের পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে সশস্ত্র আন্দোলনকারীরা। এতে সরকার তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে।

আরও দেখুন

প্রেমের সম্পর্কের ফাঁদে ফেলে তরুনীকে ধর্ষণ,থানায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাটোরের নলডাঙ্গায় বিয়ের প্রলোভনে প্রেমিকাকে ধর্ষণ করেছে রুবেল নামের প্রেমিক ও তার দুই …