নীড় পাতা / জাতীয় / পাচার হওয়া সম্পদ ফেরাতে ১০ দেশের সঙ্গে চুক্তির উদ্যোগ

পাচার হওয়া সম্পদ ফেরাতে ১০ দেশের সঙ্গে চুক্তির উদ্যোগ

নিউজ ডেস্ক:

বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ দেশে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। অর্থ পাচার সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১০টি দেশের সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনা সহজ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনতে অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিনের নেতৃত্বে সরকার গঠিত একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। সম্প্রতি ওই কমিটির নবম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হওয়া দেশের সম্ভাব্য একটি তালিকা অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে সরবরাহ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট (বিএফআইইউ)। তালিকায় রয়েছে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড ও হংকং। মূলত এসব দেশেই বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই হিসাবে এসব দেশের সঙ্গে এমএলএ অ্যাগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাস্কফোর্স। আর এই টাস্কফোর্সে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এসব চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেবে।

সূত্র জানায়, বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ দেশে ফেরত আনার ১০টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাস্কফোর্স। এর মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠান পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরতে সহযোগিতা করবে, তাদের কমিশন প্রদানের বিষয়টি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এ ছাড়া কেউ চাকরি নিয়ে বিদেশে যাওয়ার আগেই যেন বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে জানাবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া মানি লন্ডারিং মামলায় অভিযুক্তদের বিদেশ ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিএফআইইউ, সিআইডি, কাস্টম গোয়েন্দা, সিআইসি, বিএসইসি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করবে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশে তথ্য সংগ্রহের জন্য স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিবিড়ভাবে কাজ করবে। আর তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনে যে দেশে অর্থ পাচার হয়েছে, সে দেশ ভ্রমণ করবে বা বাংলাদেশি দূতাবাসের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করবে। এ ছাড়া মানি লন্ডারিং অপরাধ তদন্তের স্বার্থে নতুন সংস্থা হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্ট সেল ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে সহযোগিতা নেবে। আর নতুন এই দুই প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী তথ্য এ সংস্থাগুলো প্রদান করবে বলেও টাস্কফোর্সের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

টাস্কফোর্সের এসব উদ্যোগের বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, ‘ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী ২০০৭ সালে বাংলাদেশের এমএলএ চুক্তি করার সুযোগ ছিল। তবে দেরিতে হলেও টাস্কফোর্স কমিটি এমএলএ অ্যাগ্রিমেন্ট করার সিদ্ধান্তটি সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। এ চুক্তি আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল। তবে এই চুক্তির ঘোষণা যাতে আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। পারস্পরিক আইনি সহায়তা এই চুক্তির পরও বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে অনেক সময়সাপেক্ষ বিষয়, তবু বিষয়টি একটি কার্যকর উদ্যোগ। তবে যারা বিদেশে অর্থপাচার করেছেন, তারা প্রভাবশালী, তাই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে দেশের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ দেশে ফেরাতে রাজনৈতিক সদিচ্ছার কোনো বিকল্প নেই।’

আরও দেখুন

লালপুরে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, লালপুর: আসন্ন উপজেলা পরিষদের ২য় ধাপ নির্বাচনে নাটোরের লালপুরে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ …