বৃহস্পতিবার , মে ৩০ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / নাটোরে ভূয়া সনদে অর্ধশতাধিক দলিল লেখকদের চাকরি

নাটোরে ভূয়া সনদে অর্ধশতাধিক দলিল লেখকদের চাকরি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ভূয়া সনদ দিয়ে অর্ধশতাধিক দলিল লেখক নিবন্ধন বা লাইসেন্স নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিয়মনীতি ভঙ্গ করে এসএসসি পাস না করেই লাইসেন্স দিয়ে তাঁরা দলিল লেখার কাজ করছেন। সম্প্রতি আনোয়ার হোসেন নামে এক ভুক্তভোগি ব্যক্তি প্রতারনার শিকার হওয়ার বিভিন্ন দপ্তরে ভূয়া সনদ দিয়ে নিবন্ধন নেওয়ার বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এদিকে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করতে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) নাটোরে আসছেন রাজশাহী জেলার রেজিষ্ট্রার মতিউর রহমান। তদন্ত করতে নাটোরে আসবেন তিনি। তদন্ত করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে কোন আশ্বাস নয়, দোষিদের বিরুদ্ধে শ্বাস্তি—মুলক ব্যবস্থার দাবী জানিয়েছেন দলিল লেখকরা।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নাটোর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে এসএসসি সনদ জাল করে ভূয়া সনদে লাইসেন্স নেওয়া দলিল লেখকদের কাছে আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি কয়েকবার হয়রানির স্বীকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, নাটোর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অর্ধশতাধিক দলিল লেখক রয়েছেন। যাদের এসএসসি পরীক্ষার সনদ ভুয়া। ভুয়া সনদ তৈরি করে দলিল লেখকের লাইসেন্স নিয়েছেন।
সূত্র জানায়, বর্তমানে নাটোর সদর উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল লেখক রয়েছেন মোট ২৪৬জন। আর দলিল লেখকের লাইসেন্স পেতে হলে নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয় এসএসসি পাশ। কিন্তু অনেকেই পাশ না করেই ভূয়া বা জাল সনদ দিয়ে লাইসেন্স নিয়েছেন। অভিযোগপত্রে সাতজনের নাম উল্লেখ্য করা হয়েছে। অভিযুক্ত দলিল লেখকরা হচ্ছে, মো. আশিক আলী, মো. বাবুল আক্তার, আব্দুল আওয়াল, আব্দুল লতিফ, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. সেলিম আলী এবং শহিদুল ইসলাম। যারা এসএসসি পাশের ভূয়া জাল সনদ দিয়ে লাইসেন্স নিয়ে দলিল লেখকের কাজ করছেন।

সূত্র বলছে, অভিযুক্ত সাতজনের বাহিরেও আরও ৩০জন ভূয়া জাল সনদ দিয়ে লাইসেন্স নিয়েছেন। এরমধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য হচ্ছে, আকাশ সিকদার (লাইসেন্স নং ৩৯), শহিদুল ইসলাম (লাইসেন্স নং ১৯১), আফাজুল ইসলাম (লাইসেন্স নং ২৩১) , আব্দুর রউফ (লাইসেন্স নং ২৯৪), আয়নাল হক (লাইসেন্স নং ৩৬৭), সেন্টু সরকার (লাইসেন্স নং ৩৮৪), মাহফুজ হোসেন (লাইসেন্স নং ২১৩), আবু জাফর আলী (লাইসেন্স নং ২৯৩), ইসতিয়াক হোসেন (লাইসেন্স নং ২৮৪) , ইকবাল হোসেন বাদল (লাইসেন্স নং ১৭৯) , শফিউল ইসলাম (লাইসেন্স নং ২৭৪)।
সূত্র জানায়, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে নাটোর সদর সাব-রেজিস্ট্রারর অফিসের ৭জন দলিল লেখক এসএসসির জাল সনদধারী ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে একটি শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়। তার কিছুদিন পর নবায়নের জন্য দলিল লেখকদের লাইসেন্স নবায়ন, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়নপত্র সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় জমাদানের জন্য সাব-রেজিস্টার একটি নোটিশ জারি করেন। কিন্তু নির্দ্দিস্ট ওই সময়ের মধ্যে ৭ জন দলিল লেখক তাঁদের এসএসসি পরীক্ষার সনদ জমা দেননি। এতে করে সন্দেহের তীর তিব্র হয়। কোন ব্যবস্থাও গ্রহন করেনি জেলা রেজিষ্ট্রার।

অভিযোগ রয়েছে, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জেলা রেজিষ্ট্রার শফিকুল ইসলাম ভূয়া সনদধারীদের বাঁচানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শ্বাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী প্রকৃত দলিল লেখকদের।
এবিষয়ে নাটোর জেলা রেজিস্ট্রার শফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে আগামীকাল রাজশাহী জেলার রেজিষ্ট্রার মতিউর রহমান তদন্ত করতে নাটোরে আসবেন। তদন্ত করে সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে অভিযুক্তদের পক্ষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি।

আরও দেখুন

হিলি সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর …