নীড় পাতা / ই-লার্নিং / ডিজিটাল পুঠিয়া! আপডেট নেই উপজেলার তথ্য বাতায়ন ওয়েবসাইটে

ডিজিটাল পুঠিয়া! আপডেট নেই উপজেলার তথ্য বাতায়ন ওয়েবসাইটে

নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া (রাজশাহী):
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার সরকারি অফিসগুলোর ওয়েবসাইটে তথ্য আপডেট না থাকায় উপজেলার অনেকের কাছে ডিজিটাল ব্যবস্থা নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। ওয়েবসাইট গুলোতে সর্বশেষ তথ্য সংযোজন না থাকায় জনসাধারণকে পড়তে হচ্ছে বিভ্রান্তিতে। এতে নাগরিকরা সঠিক তথ্যের পরিবর্তে পাচ্ছেন ভুল তথ্য। ওয়েবসাইট নিয়মিত আপডেট না হওয়ায় স্থানীয় জনসাধারণের পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মীরাও সঠিক তথ্য পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এতে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী যে তথ্যগুলো স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রকাশ করার কথা, সেগুলোই নেই। তাছাড়া দপ্তরের কার্যক্রম, গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ, কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য, বিভিন্ন সভার কার্যবিবরণী, উন্নয়ন প্রকল্পের তথ্য, সুবিধাভোগীদের তালিকা এগুলোও নেই অধিকাংশ ওয়েবসাইটে।

উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত ২৬টি সরকারি দপ্তরের ওয়েবসাইট ঘেটে দেখা গেছে, ৩৩টি দপ্তরের লিংক থাকলেও অধিকাংশ লিংকেই নেই কোনো হালনাগাদ তথ্য। দীর্ঘদিন ধরে আপডেট করা হয়নি ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যগুলো। এমনকি পুঠিয়া তথ্য বাতায়নের ওয়েবসাইটে গিয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপডেট তথ্যও নেই। পাওয়া যাচ্ছে দীর্ঘদিন আগে বদলি হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম।

শুক্রবার (৫ মার্চ) সকালে উপজেলার তথ্য বাতায়নে প্রবেশ করা দেখা যায়, প্রশাসনের মাসিক কর্মসূচি, সভার নেটিশসমূহ, কার্যবিবরণী ও গুরুত্বপূন্য সিদ্ধান্ত, বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত হালনাগাদ কর্মপরিকল্পনা ফেব্রুয়ারি-জুন-জুলাই-১৮ইং পর্যন্ত হাল নাগাদ থাকলেও পরবর্তী প্রায় ৩ বছর ২০২১ ইং সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচী ও সভার কোন তথ্য পোর্টালে আপডেট নেই।

এই উপজেলার গুরুত্বপূন্য সরকারী অফিস পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম প্রায় পনের মাস দায়িত্বে থাকলেও ওয়েবসাইট পোর্টালে গিয়ে দেখা যায় ৪ বছর পূর্বের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সায়েদুর রহমান ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিবুল হাসান এর নামই থেকে গেছে।

উপজেলার আরেক গুরুত্বপূণ্য দপ্তর ত্রান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। এই অফিসের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, অফিস প্রধান হিসাবে সালাহ উদ্দীন-আল-ওয়াদুদ এর নাম ও মোবাইল। কিন্তু সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় বর্তমানে অফিস প্রধান হিসাবে মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম প্রায় দু’বছর পূর্বে থেকে এই অফিসের দায়িত্ব পালন করছেন। দপ্তরের ‘প্রকল্পসমূহ’ প্রকল্প সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি এই সাইটে। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্প সংক্রান্ত তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করলে গোপন তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। একই ভাবে উপজেলা পোষ্ট অফিসের ওয়েবসাইটে গিয়ে কোনরকম তথ্যই খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ও মোবাইল নাম্বার থাকলেও দেওয়া নেই প্রশিক্ষনের পরামর্শসহ বিস্তারিত তালিকা। একই অবস্থা উপজেলা পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন অফিসের ওয়েবসাইটেও। সেখানে কর্মকর্তা নাম থাকলেও নেই কর্মচারীদের নাম, ছবি ও মোবাইলসহ অন্যান্য তথ্য। অন্যদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পোর্টালে স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ নাজমা আক্তারসহ ৪ জন মেডিক্যাল অফিসার ও ১০ জন অফিস কর্মচারীর নাম থাকলেও সংযুক্ত নেই জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত ডাক্তার, কর্মচারীসহ জরুরী সেবা প্রাপ্তিতে এ্যাম্বুলেন্স চালকের মোবাইল নাম্বার ও ছবি।

উপজেলা বন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী নামও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়াও সেবা, সিটিজেন চার্টারসহ অন্যান্য কোন তথ্যই সংযুক্ত নেই এই দপ্তরের সাইটে। অপরদিকে উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসার শাহীনুর রহমান ও প্রশিক্ষকা খুশি খাতুন এই দু’টি নাম ছাড়া ওয়েবসাইটে জানার কোনো তথ্য ও কার্যক্রম সংযোজন নেই।

এভাবেই সমাজসেবা, যুব উন্নয়ন, সমবায়, বিআরডিবি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষা, নির্বাচন, বিএমডিএ, খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জনস্বাস্থ্য, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বিটিসিএল অফিসসহ সকল দপ্তরের বর্তমানে কোথায়, কী উন্নয়ন করা হচ্ছে এর কোনো রকম তথ্য নেই। নোটিস বোর্ডে নেই কোনো নোটিস, কোনো তথ্যই সংযোজন করা নেই অফিস গুলোতে।

অপরদিকে ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েবসাইটে ‘প্রকল্পসমূহ’ বা ক্যাটাগরিতে প্রকল্প সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্প সংক্রান্ত তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করলে গোপন তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে তা প্রকাশ করা হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকারের তথ্য বাতায়ন কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্প হতে সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একাধিকবার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। কিন্তু তারপরেও এসব অফিসের ওয়েবসাইট গুলো আপডেট করা হচ্ছে না। ফলে সহজেই আপডেট তথ্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পুঠিয়াবাসী।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা তথ্য ও প্রযুক্তি অফিসের সহকারী প্রোগ্রামার নুরুজ্জামান দেওয়ান বলেন, সবকটি সরকারি দপ্তরের ওয়েবসাইটগুলো হালনাগাদ করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে এবং একাধিকবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। তারপরও কেন ওয়েবসাইটগুলো আপডেট হচ্ছে না কেন তা বলতে পারছি না।

এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ও আইসিটি বিষয়ক কমিটির সভাপতি নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ পিএএ বলেন, উপজেলা প্রশাসনিক মূল ওয়েবসাইট সব সময় আপডেট আছে। অন্যগুলো কেন আপডেট নেই তা জরুরিভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও দেখুন

বাগাতিপাড়ায় সেরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী নির্বাচিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাটোরের বাগাতিপাড়ায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪ উপলক্ষে উপজেলা পর্যায়ে সেরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত …