নীড় পাতা / জাতীয় / গতি ফিরেছে অর্থনীতিতে

গতি ফিরেছে অর্থনীতিতে

  • মার্কেট-শপিংমলে ক্রেতাদের ঢল 
  • ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ অর্থ খুশি। এই আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দেয় যখন সঙ্গে থাকে নতুন জামা-জুতা শাড়ি কিংবা বাহারি সব প্রসাধন সামগ্রী। এজন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি কেনাকাটার। ঢাকাসহ সারাদেশে ঈদ উৎসবের কেনাকাটা শুরু হয়েছে। ক্রেতার ঢল নামছে নগরীর মার্কেট, শপিংমল ও ফ্যাশন হাউসগুলোতে। করোনা সংক্রমণের ভীতি দূর হওয়ায় দুবছর পর এবার বর্ণিল ঈদ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশবাসী। দেশের প্রধান এ ধর্মীয় উৎসব ঘিরে গতি ফিরে এসেছে অর্থনীতিতে। শুধু পোশাক-আশাকই নয়, ঈদ সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট সব খাতে কেনাকাটা বেড়েছে। আত্মীয় স্বজনের কাছে প্রবাসীরা বেশি করে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন। কয়েকদিনের মধ্যে সরকারী-বেসরকারী খাতের চাকরিজীবীরা পাবেন ঈদ বোনাস। ইতোমধ্যে পহেলা বৈশাখের ভাতা পেয়েছেন। শহর থেকে গ্রামে-সব জায়গায় কেনাকাটা ও অন্যান্য ব্যয় অর্থনৈতিক কার্যক্রমে এক ধরনের চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। চাঙ্গা হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতিও। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। 

এছাড়া রমজান ও ঈদ উপলক্ষে মানুষের বাড়তি খরচের মনোভাব থাকে। এ সময় চাকরিজীবীদের বোনাসের অতিরিক্ত অর্থ খরচ করার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া ধনী মানুষের দেয়া জাকাত ও ফিতরার মাধ্যমে দরিদ্রদের হাতেও এ সময় বাড়তি অর্থ যায়। রমজান মাসে দান-খয়রাতও বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ফলে সব পর্যায়ের মানুষই অতিরিক্ত খরচ করার সুযোগ পান। ঈদের সময়ে মানুষের যাতায়াত বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেন পরিবহন ব্যবসায়ীরা। চাঙ্গা হয় পরিবহন খাত। ঈদ কেন্দ্র করে ভ্রমণ ও বিনোদন বাবদ ব্যাপক ব্যয় হচ্ছে। এসব ব্যয় নিয়মিত অর্থ প্রবাহের বাইরে অতিরিক্ত হওয়ায় অর্থনীতিতে চাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বলছে, ঈদকে কেন্দ্র করে প্রায় শত কোটি টাকা লেনদেন হবে স্বর্ণের বাজারে।

মার্কেট থেকে সাধ্যমতো কেনাকাটাও করছেন ক্রেতারা। এ প্রসঙ্গে শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের ক্রে-ক্রাফটের বিক্রয়কর্মী হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। বিক্রি বাড়ানো এবং ক্রেতাদের দিক বিবেচনায় নিয়ে এবার পোশাকের দাম বাড়ানো হয়নি। দু’বছর পর ঈদ মার্কেটে ক্রেতারা আসছেন। কেনাকাটা করছেন। বেচাবিক্রি অব্যাহত থাকলে আপনা-আপনি ব্যবসা চাঙ্গা হবে। ঢাকার বেইলি রোডের শাড়ি হাউস থেকে শাড়ি কিনছিলেন খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা ফারহানা ইসলাম। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, দাম মোটামুটি ভালই আছে। ঈদ সামনে রেখে ইতোপূর্বে দামে যে রকম একটা গরম ভাবটা থাকত সেটি এবার দেখা যাচ্ছে না। বরং বিক্রি বাড়াতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বেশি। এ কারণে কিছুটা ছাড় দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। মার্কেট, বিপণি বিতান শপিংমলের পাশাপাশি ভাসাবী, জারা, আলমাস সুপার শপের মতো অভিজাত ফ্যাশন হাউসগুলোতেও বেচাবিক্রি জমে উঠতে শুরু করেছেন। ধনাঢ্য পরিবারের ক্রেতারা এসব ফ্যাশন হাউসে ছুটে আসছেন। আমদানিকৃত এসব পোশাকের দাম আবার বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। তাদের মতে, বেশি দামি পোশাকগুলো বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। এ কারণে এসব পোশাক বিশেষ করে শাড়ি ও পাঞ্জাবির দাম তুলনামূলক অনেক বেশি হয়ে থাকে।

এদিকে পোশাকের পাশাপাশি বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে- ফার্নিচার সামগ্রী, ইলেক্ট্রনিকস পণ্যসামগ্রী যেমন টিভি ও ফ্রিজ, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি, স্বর্ণ ও ইমিটেশন জুয়েলারির গহনা, ডায়মন্ডের রিং ও নাকফুল, জুতা-স্যান্ডেল, টুপি তসবিহসহ নানা পণ্যসামগ্রীর। এ কারণে ঈদবাণিজ্য জমে উঠেছে। নিউমার্কেট, গাউছিয়া, রমনা এলাকার দর্জি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ৭০-৮০ ভাগ টেইলার্সে নতুন করে আর পোশাকের অর্ডার নেয়া হচ্ছে না। ঈদের চাপ সামলাতে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে পাড়া মহল্লার টেইলারিং কারখানায় এখনও অর্ডার নেয়া হচ্ছে। খিলগাঁও তিলপাপাড়ার মা টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী মোঃ খালেক হাওলাদার জনকণ্ঠকে বলেন, ২০ রোজার পর আর কোন অর্ডার নেয়া হবে না। ইতোমধ্যে ঈদ সামনে রেখে তারা বিপুল সংখ্যক পোশাক বানানোর অর্ডার পেয়েছেন। ঈদের আগে এসব পোশাক সরবরাহ করতে কারিগরদের দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডাঃ দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীনও জনকণ্ঠকে বলেন, করোনার প্রভাবে অর্থনৈতিকভাবে এখানকার ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় রোজার শুরু থেকেই মানুষের উপস্থিতি বেশ ভাল। ঈদ-উল-ফিতর নিয়ে সবখাতের ব্যবসায়ীরা বেশ আশাবাদী। করোনায় একাধিকবার বিধিনিষেধের ফলে নিয়মিত মার্কেট খোলা রাখা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে করোনা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ কারণে এবা জমে উঠেছে ঈদ মার্কেট।

আরও দেখুন

পুঠিয়ায় প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে রাতের আঁধারে চলছে পুকুর খনন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পুঠিয়ায় রাতের আঁধারে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পুকুর …