নীড় পাতা / উত্তরবঙ্গ / ঈশ্বরদীতে কলাচাষে কৃষকদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা

ঈশ্বরদীতে কলাচাষে কৃষকদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা


নিজস্ব প্রতিবেদক, ঈশ্বরদী:
কলাচাষে অভূতপূর্ব সাড়া পড়েছে ঈশ্বরদীর চরাঞ্চলে। পদ্মার বিস্তীর্ণ চরে যতদূর দু’চোখ যাবে শুধু দেখা মিলবে কলাবাগান। অল্পখরচ ও ফলন ভাল সবমিলে ঈশ্বরদীতে আবাদ বেড়েছে কলাচাষের। ফলন ভাল হওয়ায় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে কৃষক, হচ্ছে ভাগ্য বদল। সবুজ পাতার মাঝে ঝুলে থাকা হাজার হাজার কলার কাদি হাসি ফুটিয়েছে চাষিদের মুখে। কৃষকদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতাও এসেছে কলাচাষে।

কামালপুর চরের কলাচাষি গোলজার বিশ্বাস জানান, ৪০ বিঘা জমিতে কলার আবাদ করেছি। বাম্পার ফলন হয়েছে। কলার আবাদ করে এ চরের কৃষকরা খুবই লাভবান হচ্ছেন। কলাচাষে সার-বীজ কম লাগে, শ্রমিক খরচ কম হয় পাশাপাশি অন্য ফসলের তুলনায় পরিশ্রমও কম হয়। কলা বিক্রি নিয়েও কোনো ঝামেলা নেই। পাইকারি ক্রেতারা বাগানে এসে কলা কিনে নিজস্ব পরিবহনে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, কলাচাষে লাভবান হয়ে বেশ কয়েকজন কৃষক সুন্দর পাকা বাড়ি করেছেন। অনেক কৃষক পাওয়ার ট্রিলার, ইঞ্জিনচালিত ট্রাক্টর ও হারভেস্টার মেশিন কিনেছেন।

বিলকেদার চরের কলাচাষি সুজন সরদার বলেন, ১০ বিঘা জমিতে কলা আবাদ করেছি। প্রতি বিঘায় চাষাবাদে খরচ ৪৫ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি কলা বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ চরে আগে গাজর, মূলা, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ হতো। এসব ফসলে খরচ বেশি লাভ কম। তাই এখন সবাই কলার আবাদ শুরু করেছে।

দাদাপুর চরের কলাচাষি মনোয়ারা বলেন, কলাচাষে এ চরের কৃষকদের ভাগ্য বদলে গেছে। এখানকার অসংখ্য কৃষক এখন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল। ৩০ বিঘা জমিতে কলা আবাদ করেছি। বিঘাতে লাভ হয়েছে কমপক্ষে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। চরে এখন আর কলা ছাড়া অন্য আবাদ নেই বললেই চলে। অথচ পাঁচ বছর আগেও এ চরে কেউ কলার আবাদ করতো না।

লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল আলিম বলেন, কলাচাষে এ ইউনিয়নের কৃষকদের মাঝে অভূতপূর্ব সাড়া পড়েছে। সব চাষিই কলাচাষে ঝুঁকছেন। বিঘা প্রতি কলাচাষে খরচ ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কলা বিক্রি হয় ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। এখানে সবরি কলা বেশি আবাদ হয়। পাশাপাশি সাগর কলা, মেহর সাগর কলা ও অমৃত সাগর কলার আবাদও হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, উপজেলায় এবার ১৮৪০ হেক্টর জমিতে কলার চাষাবাদ হয়েছে। এরমধ্যে লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নেই ১৮০০ হেক্টর জমিতে কলা আবাদ হয়েছে। কলাচাষে লাভবান হওয়ায় ইউনিয়নের কামালপুর, দাদাপুর, লক্ষীকুন্ডা, কৈকুন্ডা ও ডিগ্রীর চর জুড়ে কৃষকরা অন্য ফসল না করে এবার শুধু কলার আবাদ করেছেন। পদ্মার চরাঞ্চলে এবার কলার ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকরা লাভবান হওয়ায় প্রতিবছরই আবাদ বাড়ছে। কলাচাষের জন্য কৃষকদের সবধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।

আরও দেখুন

লালপুরে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, লালপুর: আসন্ন উপজেলা পরিষদের ২য় ধাপ নির্বাচনে নাটোরের লালপুরে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ …