নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রাম :
রোববার এইএসসি ফল প্রকাশিত হয়েছে। ভাল ফলাফলে সবাই আনান্দ করছে। আনান্দ নেই জ¦ীমের। কারন গত শনিবার সড়ক দুর্ঘটনায় চির দিনের জন্য হারিয়েছে তার মাকে। জ¦ীমের পুরো নাম ইম্মে জিনাত জাহান জ¦ীম (১৮)। জ¦ীম গুরুদাসপুর উপজেলার বাকীবেগপুর গ্রামের কৃষক হাসান আলীর (জাহাঙ্গীর) মেয়ে। দুপুরে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সবাই জ¦ীমের ফলাফর নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু কারোর মনেই নেই আনান্দ। বারবার চোখ মুছতে ছিলেন আর কথা বলছিলেন জ¦ীম।
জ¦ীমের চাচা স্কুল শিক্ষক আব্দুল মজিদ বলেন, ছোট বেলা থেকে জ¦ীম লেখাপড়ায় অনেক ভাল। সে চাপিলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৪.৫০ পেয়ে উর্তিন্য হয়। এইচএসসির ফলাফল রোববার প্রকাশ করা হয়। সেখানে ব্যবসাই শিক্ষা থেকে ৪.৬৭ পেয়ে উর্তেন্য হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জ¦ীমের মায়ের মেয়ে লেখাপড়া নিয়ে বেশ আগ্রহ্য ছিল। দুঃখের বিষয় হলো তার মেয়ের ফলাফল আজ দেখতে পেল না।
জ¦ীম বলেন, আমার মা ছোট বেলা থেকে লেখাপড়া করার জন্য উৎসহ দিত। পরীক্ষার সময় রাত জেগে সময় দিত। স্কুলে যাওয়া আসা বেশ আগ্রহ দেখাত। আজ আমার মাকে ছাড়া ফলাফল জানতে হচ্ছে। এ যে কত বড় কষ্টের তা বুঝাতে পারছি না।
জ¦ীম আরো বলেন, আমার নানী দুই বছর আগে ক্যান্সারে মারা গেছে। তখন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আমার মা ও মামা নিয়ে যেত। হাসপাতাল গিয়ে মা স্বপ্ন ছিল আমাকে নার্স বানাবে। সে জন্য নার্সিং কচিংয়ে ভর্তি করে দেয়। আমি চাই বড় হয়ে মায়ের স্বপ্ন করতে চাই।
জ¦ীম জানায়, ফলাফল ঘোষনার খবরে আমার মা খুব উৎসাহীত ছিল। বলে ছিল তোর নানাকে ডাক্তার দেখিয়ে এসে এক সাথে ফলাফলের খবর শুনব। মিষ্ঠি খাব। সবাইকে মিষ্টি খাওয়াব। প্রতিবেশীদের বলত আমার জ¦ীমের ফলাফল দিবে। তোমরা এসে মিষ্টি খেয়ে যেত। কিন্তু সবাই আসল মিষ্টির বদলে কান্না নিয়ে গেল।
হাসান আলী (জাহাঙ্গীর) বলেন, আমি কৃষক মানুষ। আমার স্ত্রী ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার উৎসাহ দিত। সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে প্রতিষ্ঠিত করব। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেলো। সে এই ফলাফল জানলে কি যে খুশি হতো।
তিনি আরো বলেন, আমার স্ত্রী স্বপ্ন আমি জেন পুরোন করতে পারি আল্লাহ যেন সে তৌফিক দেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সকাল সারে ১১ টায় বাবাকে ক্যান্সারের চিকিৎসা করার জন্য অটোরিক্সা ভারা করে রাজশাহী মেডেকেল কলেজে যাওয়ার জন্য ভাই ভাতিজিকে রেব হয় জ¦ীমের মা পারভীন খাতুন। পথে রাজশাহী পুঠিয়া এলাকায় প্রান হায় সবাই।