সোমবার , ডিসেম্বর ২৩ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / ব্যাটারী চালিত হুইল চেয়ার ও সরকারী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি,বদলে দিতে পারে শারীরিক প্রতিবন্ধী কোরবান আলীর জীবন

ব্যাটারী চালিত হুইল চেয়ার ও সরকারী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি,বদলে দিতে পারে শারীরিক প্রতিবন্ধী কোরবান আলীর জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, নলডাঙ্গা:

নাটোরের নলডাঙ্গায় শারিরিক প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি কোরবান আলীকে,পান দোকান করে পরিবারের ৬ জনের খাবার যোগায়। উপজেলার মির্জাপুর তেঘরপাড়া গ্রামের কোরবান আলীর জন্ম থেকেই দুই পা পক্ষঘাতগ্রস্ত শক্তিহীন। এক হাতের উপর ভর করে অনেক কষ্ট করে হাটাচলা করে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম কর্তা তার বাবা ৬ বছর আগে কৃষি শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে কোমরে আঘাত পেয়ে অসুস্থ হয়ে কাজকর্ম করতে না পারায় পরিবারে নেমে আসে অন্ধকার। এই পরিস্থিতে প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি তাদের জীবন। প্রতিবন্ধকতা জয় করে সংসারের হাল ধরেন শারিরিক প্রতিবন্ধী কোরবান আলী।

তিনি ছোট পান দোকান করে সামান্য আয় দিয়ে পরিবারের ৬ জনের খাবার যোগান দিচ্ছেন। এই ভাবে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে কোরবান আলীর কষ্টের সংগ্রামী জীবনযুদ্ধে টিকিয়ে রাখছে পরিবারটিকে। প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ছাড়া এখনও জুটেনি চলাচলের জন্য হুইল চেয়ার ও সরকারী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি,ভিজিএফ কার্ড ও টিসিবি ফ্যামেলি কার্ড। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,নলডাঙ্গা উপজেলার বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়নের নরশৎপুর গ্রামের বাজারের অন্যের জায়গায় ছোট একটি দোকানে পান বিক্রি করেছে। প্রতিটির পানের দাম নিচ্ছেন ৫ টাকা।

তার দোকানে অধিকাংশ পণ্য ৫ টাকা ১০ টাকা ২০ টাকা মূল্যের বিস্কুট চানাচুর ও চকলেট। দিন শেষে এসব পণ্য বিক্রি করে পান এক হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা। মুলধন বাদ দিয়ে লাভ হয় মাত্র ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কোরবান আলী এই দৈনিক রোজগারের ৩ থেকে ৪শ টাকা দিয়ে পরিবারের বাবা,মা,এক স্ত্রী ও তার দুই সন্তানের তিনবেলা খাবার যোগায়। কোরবান আলী প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা ছাড়া আর কোন সরকারী সুযোগ সুবিধা পায়না।

একটি ব্যাটারি চালিত হুইল চেয়ারের অভাবে শারিরিক প্রতিবন্ধী কোরবান আলী বাড়ি থেকে দুই হাতের উপর ভর করে প্রায় ১ কিলোমিটার দুরে নরশৎপুর বাজারে তার পান দোকানে যাতায়াত করেন। দোকান খোলার পর কথা হয় শারিরিক প্রতিবন্ধী কোরবান আলীর সাথে। তিনি বলেন,আমার পিতা ৬ বছর আগে অন্যের বাড়িতে কৃষি শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে কোমরে আঘাত পেয়ে অসুস্থ হয়ে আর কাজ করতে পারেনা। বাধ্য হয়ে আমাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছি।

এই পান দোকান করে দৈনিক ৩ থেকে ৪ শ টাকা আয় করে ৬ জনের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। মাঠে নেই কোন জমি এমনকি যে জায়গায় বাড়ি আছে সেটা তার মামাদের। কোরবান আলীর দাবী, আমাকে একটি ব্যাটারী চালিত হুইল চেয়ার,আমার পিতা অথবা মায়ের নামে যদি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড ও টিসিবির ফ্যামেলি কার্ড দেওয়া হয়,তাহলে অনেকটা কষ্ট লাঘব হবে।

আর সরকারী আশ্রায়ণ প্রকল্পের একটি বাড়ি পাওয়া আকুতি জানান তিনি। শারিরিক প্রতিবন্ধী কোরবান আলীকে আমার পরিষদ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী। নাটোর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,শারিরিক প্রতিবন্ধী কোরবান আলী কারও কাছে হাত না পেতে পান দোকান করে সংসার চালাচ্ছেন এই বিষয়টাকে আমি সাধুবাদ জানাই। তাকে আমরা উপজেলার সমাজসেবা কার্যালয় হতে প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হচ্ছে,তার জন্য আরও অন্য কিছু করা যায় কিনা আমি ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা চিন্তা করে দেখবো।

আরও দেখুন

পেঁয়াজের চারা পুড়ে শেষ-কৃষকের মাথায় হাত! জমিতে এখন শুধুই ঘাস!

নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,,,,,জমিতে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের চারা দেখে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জমি লিজ নিয়ে …