নিজস্ব প্রতিবেদক,নলডাঙ্গা:
নাটোরের নলডাঙ্গায় ভেজাল আমন বীজে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাথে ভালো আচরন ও সহযোগিতা না করে তিরস্কার করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফৌজিয়া ফেরদৌসের বিরুদ্ধে। ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগি কৃষকরা এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে গত বৃস্পতিবার নাটোর জেলা প্রশাসক,নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বরাবরসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ^াস দিয়েছে নাটোর জেলা প্রশাসক ও নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নাম ফৌজিয়া ফেরদৌস। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নলডাঙ্গা উপজেলার বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়নের বৈদ্যবেলঘরিয়া ও চকভবানীপুর গ্রামের ১৫ জন কৃষক ও পিপরুল ইউনিয়নের ঠাকুরলক্ষীকুল গ্রামের ১৭ জন কৃষক নলডাঙ্গা বাজারের সেলিম বীজ ভান্ডার থেকে আমন ধানের বীজ কিনে প্রতারিত হয়।কৃষকরা এ ভেজাল আমন বীজ জমিতে রোপন করে ধানের ফলন না হয়ে চিটা হয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ নিয়ে গত ১৭ অক্টোবর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা নলডাঙ্গা বাজারের সেলিম বীজ ভান্ডারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও),উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও নাটোর বীজ প্রত্যায়ন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
এতে কোন প্রতিকার না পেয়ে ও ক্ষতিপূরণের দাবীতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা মানববন্ধন করেন।এ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও বেসরকারী দুটি টিভি চ্যানেলে সংবাদ প্রচার হয়।গনমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা ভেজাল বীজ বিক্রেতা নলডাঙ্গা বাজারের সেলিম বীজ ভান্ডারের দোকানে তালা লাগিয়ে বন্ধ করে দেয় এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ভেজাল আমন বীজে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার লক্ষে বীজ ব্যবসায়ী সেলিম রানার কাছ থেকে ৯৮ হাজার টাকা আদায়ে মুচলেখা আদায় করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা।
কিন্ত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণের টাকা পাবে কিনা জানতে গত বুধবার দুপুরে বৈদ্যবেলঘরিয়া ও চকভবানীপুর গ্রামের ৮-১০ জন কৃষক নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান।ভেজাল গত গত বৃস্পতিবার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফৌজিয়া ফেরদৌসের বিরুদ্ধে আমন বীজে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাথে ভালো আচরন না করা ও সহযোগিতা না করে তিরস্কার করায় ক্ষুদ্ধ হয়ে ভুক্তভোগি কৃষকরা লিখিত অভিযোগ করেন নাটোর জেলা প্রশাসক,নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বরাবরসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে। কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ^াস দিয়েছে নাটোর জেলা প্রশাসক ও নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
তবে নলডাঙ্গা বাজারের সেলিম বীজ ভান্ডারের মালিকের ছেলে সেলিম রানা এক সংবাদ সম্মেলনে গত বছরের বোরো মৌসুমের প্রিমিয়াম সীড ব্রি-২৯,দিনাজপুর সীড কোম্পানির বীজ আমন মৌসুমে বিক্রি করায় কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে।এটা তার ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা চান।তিনি অভিযোগ করেন কৃষি অফিস আমার কাছ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলে ৯৮ হাজার টাকা আদায়ে মুচলেখা নিয়েছে।
কিন্ত এখনও পযন্ত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণ পাইনি বলে অভিযোগ করেন
বৈদ্যবেলঘরিয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নিজাম উদ্দিন,হায়দার,রশিদ,হামেদ আলী ও সালাম বলেন,সেলিম বীজ ভান্ডার থেকে আমন ধানের বীজ কিনে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই।এনিয়ে ক্ষতিপূরণ চেয়ে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করি।এতে কোন ক্ষতিপূরণ বা প্রতিকার না পেয়ে উপজেলা কৃষি অফিসে জানতে যাই।তাতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমাদের সাথে ভালো আচরন না করে কোন পরামর্শ না দিয়ে এমনকি সহযোগিতা না করে আমাদেরকে তিরস্কার করে অফিস থেকে বের করে দেন।কৃষি কর্মকর্তা আমাদের বলেন আপনারদের কোন পরামর্শ বা কোন সহযোগিতা করা হবে না আপনরা যা পারেন তাই করেন।এতে আমরা ক্ষুদ্ধ হয়ে নাটোর জেলা প্রশাসক ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
ভেজাল বীজে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাথে অহযোগিতা করার অভিযোগ বিষয়ে জানতে নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফৌজিয়া ফেরদৌসের সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন,এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে কৃষকরা।অভিযোগের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে ক্ষতির পরিমান নিরুপন করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের শনাক্ত করে ক্ষতিপূরণ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে অহযোগিতার যে অভিযোগ করেছে সোটাও তদন্ত করা হবে।
নাটোর জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভুঞাঁ বলেন,কৃষকদের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি অভিযোগ বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে দেখা হবে।