নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের নলডাঙ্গায় যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী রোকেয়া বেগমকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী ওসমান গনি’র ফাঁসী ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় ঘোষণা করেন। দন্ডপ্রাপ্ত ওসমান গনি উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের মৃত ইসমাইল মৃধার ছেলে।
আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান জানান, আসামী ওসমান গনির সাথে নাটোরের সিংড়া উপজেলার উত্তর খাজুরিয়া গ্রামের মৃত আদব আলীর মেয়ে রোকেয়া বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবী করে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালায় স্বামী ওসমান গনি। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বেশ কয়েকবার অল্প অল্প করে রোকেয়া বেগম তার ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা এনে দেয় স্বামীকে। কিন্তু তার যৌতুকের চাহিদার মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন রোকেয়ার ভাই। এনিয়ে রোকেয়ার সাথে ওসমান গনির প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো।
এরই এক পর্যায়ে ২০১৩ সালের ২১ আগস্ট রাতে স্ত্রী রোকেয়া বেগমের গলায় শাঁড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্বামী ওসমান গনি। এরপর রোকেয়া বেগম আত্মহত্যা করেছে বলে রোকেয়ার ভাইদের জানায় এলাকাবাসী। পরে রোকেয়ার ভাই সেখানে গিয়ে রোকেয়ার মরদেহ দেখতে পায়। ঘটনার পরের দিন নিহত রোকেয়া বেগমের বড় ভাই একাব্বর হোসেন বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ ওসমান গনিকে গ্রেফতার করে এবং তার বিরুদ্ধে অভযোগ পত্র দায়ের করেন আদালত। দীর্ঘ ১০ বছর মামলার স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহণ শেষে আসামীর উপস্থিতিতে আদালতের বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন। মামলার রায়ে বাদী পক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবী জানান।