শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / ধর্মীয় সম্প্রীতির বিরুদ্ধে অপপ্রচারে সতর্ক থাকুন: প্রধানমন্ত্রী

ধর্মীয় সম্প্রীতির বিরুদ্ধে অপপ্রচারে সতর্ক থাকুন: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের মাতৃভূমিকে এগিয়ে নিতে আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের যে কোনো পদক্ষেপ এবং জাতির অগ্রগতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার সম্পর্কে সবাইকে তিনি সর্বদা সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার গণভবনে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

হিন্দুদের সংখ্যালঘু না মনে করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে অন্যসব ধর্মাবলম্বীর মতোই সমান অধিকার নিয়ে বাস করবেন। কেন আপনারা নিজেদের সংখ্যালঘু বলেন? এদেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বলতে কিছু নেই। বরং, বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করে। নিজেদের সংখ্যালঘু বা দুর্বল মনে করবেন না। আপনারা কেনইবা এমনটা মনে করেন-যেখানে আপনারা এদেশেরই মানুষ? এ মাটিতে যারা জন্মেছেন তারা এ মাটিরই সন্তান এবং এ দেশের নাগরিক হিসাবে তাদের সব ধরনের অধিকার রয়েছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আপনারা (হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ) সব অধিকার নিয়ে এ দেশে বাস করবেন। তার সরকার সর্বদা বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার এবং সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখানে একজন আরেকজনের অধিকার ক্ষুণ্ন করবে না এবং সব মানুষ সমান অধিকার উপভোগ করে জীবনযাপন করবে।

তিনি বলেন, আমরা জানি সব জয়গায় কিছু স্বার্থান্বেষী লোক আছে-যারা কিছু সমস্যা তৈরি করতে চায়। কেউ যেন কোনো সমস্যা তৈরি করতে না পারে সেদিকে সবাইকে নজর দিতে হবে। সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধ্বংস হয়ে যায়। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বারংবার অমানবিক নির্যাতন ও দমন-পীড়নের শিকার হয়েছে। সামরিক স্বৈরশাসক জিয়া সংবিধান সংশোধন করে সব ধর্মের অধিকার রক্ষা ও ধর্মীয় উৎসব পালনের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সব অনুচ্ছেদ বাতিল করেন। কিন্তু আমরা সংবিধান সংশোধন করে আবারও সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের জন্য সমান অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি। অসাম্প্রদায়িক চেতনা পুনরুদ্ধার করতে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে আমরা সক্ষম হয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি চাই-সবাই নিজ নিজ ধর্ম যথাযথভাবে পালন করুক। এক সময় (সরকারি) চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য ছিল। কিন্তু এখন এ বৈষম্য নেই। সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রেও সরকার যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন করে।

তিনি বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে-প্রতিটি ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব স্বাধীনভাবে পালন করবে।

তিনি বলেন, দেশটি সবার। কারণ ১৯৭১ সালে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। স্মার্ট সরকার, স্মার্ট দক্ষ জনশক্তি, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সোসাইটি নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে আমরা আরও এগিয়ে যাব। কারণ তার সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইতোমধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছে। অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভিন্ন খাতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভিন্ন খাত, বিশেষত কৃষিতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এখন নতুন প্রজন্মের যুগ। তাই দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ হতে পারে। পাকিস্তানের বিদায়ি হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবণে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, তার সরকার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে এবং উৎপাদন বাড়াতে কৃষি গবেষণায় প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে কৃষি গবেষণা অত্যন্ত ইতিবাচক ফলাফল দেয়। কৃষি গবেষণার ক্ষেত্রে দুই দেশের কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মধ্যে পারস্পারিক সহযোগিতা হতে পারে। বাংলাদেশে সফল মেয়াদের জন্য পাকিস্তান হাইকমিশনারকে শেখ হাসিনা ধন্যবাদ জানান।

বৈঠকে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্যের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়ন দৃশ্যমান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ খুবই উদ্যোগী এবং পাকিস্তানের মানুষেরও এ ব্যাপারে যথেষ্ট সুনাম আছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

আরও দেখুন

রাণীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে  ১৫ভরি স্বর্ণের ও 

১০০ভরি চান্দির গহনা ছিনতাই নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,,  নওগাঁর রাণীনগরে দোকান থেকে বাড়ী ফেরার  পথে পথ …