নিজস্ব প্রতিবেদক, লালপুর:
নাটোরের লালপুরে স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগে স্বামী বাবু(৩০) কে আটক করেছে লালপুর থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই ২০২৩) সকালে উপজেলার ওয়ালিয়া বাজার এলাকার ভাড়া বাসা থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে উপজেলার দুয়ারিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে ফল ব্যবসায়ি বাবু (৩০) উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের সাইদুল ইসলামের মেয়ে জান্নাতুল খাতুন বৃষ্টির (২৫) বিয়ে হয়। ব্যবসার সুবিধার্থে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে ওয়ালিয়া বাজারে জনৈক আব্দুস সামাদ হাজির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
বৃহস্পতিবার সকালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে স্ত্রীকে বেধড়ক মারপিট করে বাবু দোকানে চলে যান। সকাল সোয়া ৬টার দিকে তার শ্যালিকা অন্তরা মোবাইলের মাধ্যমে বাবুকে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে বলেন। বাসায় পৌঁছে বন্ধ দরজা ভেঙ্গে দেখেন তার স্ত্রী জান্নাতুল বৃষ্টি (২৫) নিজ শয়ন ঘরে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন। তখন তিনি তাড়াহুড়া করে নামিয়ে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যু সন্দেহজনক হওয়ায় বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে লালপুর থানা পুলিশ।
বৃষ্টির বাবা সাইদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তিন বছর আগে বৃষ্টির বিয়ে হলেও বাবু তার মেয়েকে শারিরীক ভাবে নির্যাতন করতো এবং যৌতুকের দাবি করলে ১লক্ষ ২০হাজার টাকা দিয়ে একটি মোটরসাইকেল কিনে দিলেও বৃষ্টিকে মাঝেমধ্যে মারপিট করতো। এব্যাপারে এলাকায় কয়েক বার সালিশি বৈঠকও হয় । তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করতেই পারে না। তাকে হত্যা করে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রখেছিল।
এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
বাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে জানা যায়, বৃষ্টি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সকাল থেকেই লাশের সাথে রয়েছেন তারা। হাসপাতাল থেকে জানতে পেরেছেন তার কানের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশটি ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে, ময়নাতদন্তের পরেই জানা যাবে হত্যা না আত্মহত্যা।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জামিলা খাতুন বলেন, নিহতের কানের নিচে ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উজ্জ্বল হোসেন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি প্রক্রিয়াধীন আছে।