নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে শনিবার ব্যাপক ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এই ঘটনার জন্য জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে দায়ী করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপি। এর আগে শনিবার বেলা ১১ টার দিকে শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা বিএনপি কার্যালয়ের বাহিরের কাঁচের গ্লাস , সিসিটিভির ক্যামেরা ব্যাপক ভাবে ভাংচুর করে। এ সময় হামলাকারীরা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে লাগানো ব্যানার ফেস্টুন খুলে রাস্তায় ফেলে দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে হামলাকারীদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সদরের তেবাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি ঘোষণার কথা ছিল। সে অনুযায়ী বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী সকালেই দলের জেলা কার্যালয়ের ভিতরে এসে অবস্থান নেয়। এ সময় কার্যালয়ের বাহিরের দরজা খোলা ছিল। বিএনপি নেতাকর্মীদের কার্যালয়ে অবস্থানের বিষয়টি টের পেয়ে কার্যালয়ের বিপরিত দিকে রাস্তার পাশে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে। নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেছেন, শনিবার সকালে সদর উপজেলার তেবারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির কয়েজন নেতাকর্মি কমিটি গঠনের বিষয়ে নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলার জন্য দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে বসেছিল।
এ সময় জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব ও ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ, সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাহিনের নেতৃত্বে শতাধিক যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মি মোটরসাইকেল বহর নিয়ে গিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বাড়ি ও জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাংচুর করতে থাকে। হামলাকারীরা দলীয় কার্যালয়ে টাঙ্গানো বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন সহ সিসি টিভি ক্যামেরাগুলোও ভেঙ্গে রাস্তায় ফেলে দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ গিয়ে তাদের সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
ঘটনার প্রতিবাদে ও হামলাকারীদের আটক করে উপযুক্ত বিচারের দাবীতে বিকেলে আলাইপুরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, সদর থানা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আলম আবুল, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম আফতাব, মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন, ছাত্রদল সভাপতি কামরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি সানোয়ার হোসেন তুষার প্রমুখ। বক্তারা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনার জন্য দায়ী যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আটক করে উপযুক্ত বিচারের আওতায় আনার দাবী জানান।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ জানান, তারা মোটরসাইকেল যোগে স্টেশনের দিক থেকে বাজারে যাচ্ছিলেন এই সময় বিএনপির অফিস থেকে তাদের উপরে ঢিল ছোড়া হয়। এর পরই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে পালটা তাদের দিকে ইট পাটকেল ছুঁড়ে। ঘটনাটি সম্পূর্ণ উস্কানিমূলক ছিল বলে তিনি পরে তাদের নিবৃত্ত করে বাজারের দিকে নিয়ে চলে যান।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ হামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তাৎক্ষনিক পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেছে। শনিবারের ঘটনার বিষয়ে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি বলেও তিনি জানান।