নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনির ও তার লোকজন মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দিচ্ছে এমন অভিযোগ এনে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করা কথিত গৃহবধূ মনিকা খাতুনকে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকা অবস্থায় খদ্দেরসহ আটক করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায় শহরের হরিশপুর এলাকায় অবস্থিত ভিআইপি আবাসিক হোটেলের ৪০৫ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে খদ্দেরসহ আটক করা হয়।
নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে নাটোর সদর থানার এস.আই এসমাঈল হক সহ সঙ্গীয় ফোর্স শহরের হরিশপুরে হোটেল ভিআইপিতে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় হোটেলটির ৪০৫ নং কক্ষ থেকে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় নলডাঙ্গা উপজেলার পূর্ব সোনাপাতিল গ্রামের নয়ন প্রামানিকের কথিত স্ত্রী মনিকা খাতুনকে তার খদ্দের শহরতলীর বনবেলঘড়িয়া এলাকার ফায়জুলের ছেলে টুটুল সহ আটক করে। বর্তমানে তারা থানা হেফাজতে রয়েছে।
একটি সুত্র জানায়, গত ৪ জুন মনিকা খাতুন নলডাঙ্গা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড ছাত্র লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নিশানের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে গত ৫ জুন রাতে নলডাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় নিশানকে ওই রাতেই পুলিশ গ্রেফতার করে। পরদিন মামলাটিকে মিথ্যা বলে অভিহিত করে এলাকাবাসী নিশানের মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
এ সময় বক্তারা বলেন নাটোরের নলডাঙ্গায় রেলওয়ের একটি জলাশয় লিজ নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই মামলা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা ও গোরস্থানের উন্নয়নকল্পে বরাবরের মত প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে রেলওয়ের একটি জলাশয় লিজ নেওয়া হয়। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল নিজেদের স্বার্থের জন্য একটি জাল কাগজ তৈরী করে জলাশয়টি দখল নিতে চেষ্টা করে। জলাশয়টি তাদের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রতিবাদ করে নিশান প্রামানিক। আর সেই বিরোধের কারনেই ওই গৃহবধুকে জড়িয়ে মামলাটি করানো হয়।
পরে গত ৮ জুন নাটোর শহরের একটি রেস্তোঁরায় ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে কথিত গৃহবধূ মনিকা ওরফে স্মৃতি অভিযোগ করেন, গত সোমবার (৫ জুন) রাতে ছাত্রলীগ নেতা নিশানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ধর্ষণ মামলা প্রত্যাহারের জন্য নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনির ও মেয়রের ভাতিজা সাগর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। আপোষ করে মামলা না তুললে তারা তাদের অনুসারিদের দিয়ে আমাদের একঘরে করে রাখার হুমকি দিচ্ছে। এ সংক্রান্ত রেকর্ডিং তার কাছে রয়েছে। হুমকি ভয়ভীতি বন্ধে নাটোরের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
অবশ্য মেয়র মরিুজ্জামান তারবিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে শুধু সমঝোতা করে নেওয়ার কথা বলেছেন, কোন হুমকী দেননি।
সংবাদ সম্মেলনের দুইদিন পরে কথিত সেই গৃহবধু মনিকা খাতুন শনিবার সন্ধ্যায় অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকা অবস্থায় খদ্দের সহ গ্রেফতার হলেন। এবং সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা স্বামী রকি এর স্থলে রকির ছোট ভাই নয়নকে স্বামী বলে উল্লেখ করেছেন মনিকা।