নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধীদের শনাক্ত করতে এবার ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) আওতায় আনতে যাচ্ছে গোটা রাজধানীকে। তবে এটা সরকারি টাকা খরচ করে নয়, সাধারণ মানুষের বাসাবাড়ি, মার্কেট, দোকানে লাগানো সিসিটিভির সংযোগ পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়ে গেছে। গুলশান, বনানী, বারিধারা, নিকেতন, তেজগাঁওসহ আশপাশের এলাকা নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এতে প্রায় ২ হাজার সিসিটিভি নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। পুরো রাজধানীতে এমনভাবে ৫০ হাজার সিসিটিভিকে যুক্ত করার কাজ চলছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক ইত্তেফাককে বলেন, গুলশান, বনানী, বারিধারা এলাকায় বেসরকারি উদ্যোগে লাগানো যে সিসিটিভি আছে, সেগুলো আমাদের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। একইভাবে সারা ঢাকা শহরে বেসরকারি উদ্যোগে যেসব সিসিটিভি লাগানো আছে, সেগুলোর যদি একটি করে কানেকশন আমাদের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষে দেয়, তাহলে পুরো রাজধানীর অন্তত ৮০ ভাগ এলাকা আমাদের নেটওয়ার্কের মধ্যে চলে আসবে। কমিউনিটির সহায়তায় অর্থাৎ জনগণের সহায়তায় আমরা নতুন কোনো প্রজেক্ট না করেও পুরো ঢাকা শহরকে সিসিটিভির মধ্যে আনতে চেষ্টা করছি।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ইতিমধ্যে যে সিসিটিভিগুলো যুক্ত করা হয়েছে, তাদের আপগ্রেড করার জন্য অনুরোধ করা শুরু করেছিল। অনেকেই তাদের সিসিটিভি আপগ্রেড করেছেন। ক্যামেরাগুলো আপগ্রেড করা হলে এখান থেকেই লাইভ ফিড পাওয়া যাবে। পাশাপাশি ফেস ডিটেকশন, স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম সিস্টেম এবং ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারী গাড়িগুলোর নম্বর প্লেটও শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এই ক্যামেরাগুলোতে ১১ ধরনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারী গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা পৃথক একটা প্রকল্প নিচ্ছি। সেটা আলাদাভাবে রাস্তায় সিসিটিভি বসানো হবে। ইতিমধ্যেই ঢাকা শহরের ১৪টি প্রবেশ ও বের হওয়ার পয়েন্টে সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। গুলশান এলাকার সিসিটিভি মনিটরিংয়ের জন্য গুলশানে একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ তৈরি করা হয়েছে। এর বাইরে আবদুল গনি রোডে সচিবালয়ের উল্টোদিকে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষ রয়েছে। জানা গেছে, ঢাকা মহানগরীর ২২১ পয়েন্টে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মনিটরিং সিস্টেমে এখন প্রায় ৬৮০টি সিসিটিভি রয়েছে। এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৯৯টি স্থানে ৬২৫টি সিসিটিভি রয়েছে।
ডিএমপির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আমরা থানার মাধ্যমে সিসিটিভি মালিকদের কাছে পৌঁছাচ্ছি এবং তাদের ক্যামেরার মান উন্নত করার জন্য অনুরোধ করছি। তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে, দ্রুত সেবা পেতে পুলিশের জাতীয় জরুরি নম্বর ৯৯৯-এর সঙ্গে এই প্রযুক্তিটি ট্যাগ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুলিশের নেতৃত্বে সিসিটিভির উদ্যোগে গুলশান, বনানী এলাকায় অপরাধ অনেকটাই কমে এসেছে। একই সঙ্গে এই সিসিটিভি দিয়ে ফেস ডিটেকশন করা গেলে অপরাধ অনেক কমে আসবে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, আমাদের ডাটাবেজে থাকা কোনো অপরাধী যদি ক্যামেরার সামনে পড়েন, তাহলে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষে বার্তা চলে যাবে। তাতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ আরও সহজ হবে বলেই মনে করছেন তারা।