কমিটির নির্ধারিত বয়স ৩ বছর। বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হতে আর বাকি তিন মাস। সংগঠনটির শীর্ষ দুই নেতার দ্বন্দ্বে ৩৩ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি বিএনপির এই অন্যতম সহযোগী সংগঠন। এমন অভিযোগ করে যুবদলের পদপ্রত্যাশীরা বলছেন, কোন্দল ও দূরদর্শী নেতৃত্বের অভাবেই রাজপথে দাঁড়াতে পারছে না যুবদল। এককথায় বলা যায় কমিটি নিয়ে দলীয় অন্তঃকোন্দলে বর্তমানে লেজেগোবর অবস্থা যুবদলের।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য আন্দোলন না করায় ইতোমধ্যেই বিএনপির এই অঙ্গসংগঠনটির সমালোচনা করেছেন তারেক জিয়া। ৩০ ডিসেম্বরর নির্বাচনে ভরাডুবির পর অনেকটাই নিষ্ক্রিয় এই সংগঠনের কার্যকলাপ নিয়ে খোদ বিএনপির মধ্যেই বিরাজ করছে অস্বস্তি। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মাঠে দৃশ্যমান কোনো ভূমিকা নেই সংগঠনটির নেতাকর্মীদের। অথচ তারা শুধুমাত্র জন্মদিন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, দলীয় প্রধানের শাহাদাতবার্ষিকী ইত্যাদি পিকনিকের মত দিবস কেন্দ্রীক অনুষ্ঠান করে যাচ্ছে।
গত ৯ অক্টোবর যুবদলের ৫ নেতার সঙ্গে স্কাইপে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখানে তিনি যুবদলের সমালোচনা করে তারেক জিয়া ২০ অক্টোবরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দিতে পারেনি যুবদল। যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ত্যাগী, পরীক্ষিত ও রাজপথের নেতাদের নিয়ে যুবদলের কমিটি হবে।’ তবে বাস্তবে কি তাই! যদি তাই হতো তবে আজ অবধি ত্যাগী নেতা কাউকেই কেন পাওয়া গেলো না! এমন প্রশ্ন উঠছে বিএনপিতেই!
দফায় দফার মিটিং করেও কেন তারা আজ অবধি কমিটি গঠন করতে পারেনি তার সঠিক তথ্য কেউ দিতে পারেনি। কিন্তু এটি সুস্পষ্ট যে, মূলত শীর্ষ নেতাদের ক্ষমতা নিয়ে কাড়াকাড়ির জন্যই নতুন কমিটি দেওয়া যাচ্ছে না। সংগঠনটির পদপ্রত্যাশী অনেকের কথায় এটি সুস্পষ্ট। যুবদলের গত কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক থাকাবস্থায় সাইফুল আলম নীরবের নিজস্ব বলয় ছিল। এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি নিজের আস্থাভাজনদের রাখতে চান। অন্যদিকে, ছাত্রদলের সভাপতি থাকাবস্থায় সুলতান সালাউদ্দিন টুকু তার নিজস্ব একটি বলয় তৈরি করেছেন। তিনি আস্থাভাজনদের কমিটি করতে চান। ক্ষমতার এই লড়াইয়ে শেষমেষ করা থাকে যুবদলের কমিটিতে- সেদিকেই এখন চোখ বিএনপি কর্মীদের।