নিউজ ডেস্ক:
ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় সহজেই ভ্যাট দাখিল করা সম্ভব হয়েছে। ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব বোর্ডে দেশের ৪ লাখ ৪ হাজার ৩৭৬টি অনলাইন ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে।
সরকারের ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার কারণে অফিসে না গিয়েও সহজেই ভ্যাট দাখিল করা সম্ভব হয়েছে। ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব বোর্ডে দেশের ৪ লাখ ৪ হাজার ৩৭৬টি অনলাইন ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। আর প্রতি মাসে দাখিল হওয়া ভ্যাটের প্রায় ৮৪ শতাংশ অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার দুপুরে খুলনার খালিশপুরে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনার ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ১৬৬টি দেশে ভ্যাট ব্যবস্থা চালু রয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২১-২২ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে ১৬ দশমিক ০৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যেখানে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগৃহীত ভ্যাটের প্রবৃদ্ধি ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ।
সেমিনারে আরও জানানো হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের বাজেটে মোট ব্যয়ের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।
এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে খুলনা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিগত পাঁচ মাসে ৮২৭ কোটি টাকা ভ্যাট আদায় সম্পন্ন হয়েছে।
ভ্যাট দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘উন্নয়নের ভ্যাট নীতি, ভ্যাট দিয়ে গড়ব জাতি’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সঠিকভাবে ভ্যাট আদায় গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়ীদের আইনের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে ভ্যাট দিতে হবে। পাশাপাশি রাজস্ব দপ্তরের কর্মকর্তাদেরও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। আপনাদের মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে নিজের টাকায় পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিদেশি সাহায্যের ওপর আমাদের নির্ভরশীলতাও কমেছে।’
তিনি দাবি করেন, ‘বর্তমানে খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। এসব উন্নয়ন জনগণের ভ্যাট-ট্যাক্সের টাকায় হচ্ছে। সঠিক নিয়মে ভ্যাট দিয়ে নাগরিক দায়িত্ব পালন করলে নিজেদের টাকায় দেশকে আরো এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিল্যাড ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট এসএম হুমায়ুন কবীর, মোংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান, খুলনা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপিল) কমিশনারেটের কমিশনার ড. নাহিদা ফরিদী, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. সাজিদ হোসেন ও খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহসভাপতি মোস্তফা জেসান ভুট্ট।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মুহম্মদ জাকির হোসেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উপ-কর কমিশনার বেলাল হোসেন এবং স্বাগত জানান যুগ্ম কর কমিশনার মো. মাজেদুল হক।
অনুষ্ঠানে ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হয়। সম্মাননা পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে খুলনার শিরোমনি বিসিক শিল্প এলাকার মেসার্স খোরশেদ মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ, দৌলতপুরের সেভ অ্যান্ড সেইভ, ঝালকাঠির মেসার্স সাবিহা কেমিক্যাল ওয়ার্কস, পটুয়াখালীর পানজা বিড়ি লিমিটেড, বরগুনার মেসার্স উজ্জ্বল কেমিক্যাল ওয়ার্কস, বরিশালের এমইপি প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ, বরিশালের নিউ পার্ক বাংলা, বরিশালের নাদিয়া ফার্নিচার লিমিটেড, মোংলার দুবাই বাংলাদেশ সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, মাদারীপুরের চাঁন বিড়ি ফ্যাক্টরি, মাদারীপুরের মেসার্স সিগমা ট্রেডার্স, মাদরীপুরের হোটেল সার্বিক ইন্টারন্যাশনাল, শরীয়তপুরের বাজাজ ভিলেজ, সাতক্ষীরার বাজাজ সেলস পয়েন্ট এবং সাতক্ষীরার মেসার্স জয়হুন ডেইরি শপ।