নিউজ ডেস্ক:
পাঁচ দফা দাবিতে ডাকা লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুক্রবার বন্দর ভবনে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নৌযান শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এ সময় বন্দর কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মূল দাবি মেনে নেন। এর পরই চট্টগ্রাম থেকে নৌপথে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। ধর্মঘটে প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা লাইটার জাহাজে পণ্য খালাস ও পরিবহন বন্ধ ছিল।
শুক্রবার বিকেলে বন্দর ভবনে বৈঠকে বসেন শ্রমিকরা। তাতে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা হয়। বৈঠকে স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান, নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলমসহ শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, শ্রমিকদের মূল দাবি ছিল চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল করা। বন্দর কর্তৃপক্ষ এই দাবি মেনে নেওয়ায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ধর্মঘটের মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী মাদার ভেসেল (বড় জাহাজ) চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থান করে। মাদার ভেসেল থেকে লাইটারেজে করে এসব পণ্য এনে বন্দরসহ বিভিন্ন ঘাটে রাখা হয়। কিন্তু শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন ব্যবসায়ীরা।
লাইটারেজ শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলাকালে শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামে স্ট্র্যান্ড রোডের বাংলাবাজার লাইটার শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন। এতে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, পতেঙ্গার চরপাড়া ঘাটের ইজারাদারের লোকজন ৮-৯ শ্রমিককে মারধর ও হেনস্তা করেছেন। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
লাইটারেজ শ্রমিক নেতারা জানান, মারধরের প্রতিবাদে চরপাড়া ঘাটের সামনে থেকে সব লাইটারেজ পারকির চর এলাকায় নিয়ে যান নৌযান শ্রমিকরা। পারকির চর এলাকায় অবস্থানরত নৌযান থেকে শ্রমিকরা বিমানবন্দর সড়কের শেষ মাথায় চায়নিজ ঘাট ব্যবহার করে জাহজে পণ্য উঠানামা করতে শুরু করেন। সেই ঘাটটিও বৃহস্পতিবার উচ্ছেদ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর পরই ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার বিকেলে লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে গিয়ে লাইটার জাহাজে পণ্য উঠানামা ও পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেন।
নৌযান শ্রমিকদের এই ধর্মঘট নদীপথে পণ্য পরিবহনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। কারণ প্রতিদিন গড়ে দেড় লাখ টনের বেশি আমদানি পণ্য বহির্নোঙর থেকে লাইটার জাহাজে করে সারাদেশের নানা ঘাটে নেওয়া হয়। ধর্মঘটে দিনভর এই কার্যক্রম ব্যাহত হয়।