নিউজ ডেস্ক:
দেশের সাতটি নার্সিং কলেজে ৩২৯ পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে এই প্রস্তাব সংক্রান্ত ফাইল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুমোদিত হয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে গেছে গত জানুয়ারি মাসে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এখনো অনুমোদন মেলেনি।
সাতটি নার্সিং কলেজগুলো হলো—ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও বরিশাল। দ্রুত অর্থ মন্ত্রণালর থেকে ছাড়ের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নার্সিং সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সাতটি নার্সিং কলেজে যেসব পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—অধ্যাপক পদ ৩৫টি, সহযোগী অধ্যাপক ৩৫টি, সহকারী অধ্যাপক ৬৩টি, সহকারী অধ্যাপক ৬৩টি, প্রভাষক ১১২টি, ল্যাব ইনচার্জ সাতটি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাতটি, পিএ টু অধ্যক্ষ সাতটি, অডিও ভিজুয়াল টেকনিশিয়ান সাতটি, হিসাব রক্ষক সাতটি, স্টোর কিপার সাতটি, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ১৪টি এবং ল্যাব সহকারী পদ ২৮টি। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপসচিব নাসরিন পারভীন স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লিখিত প্রস্তাব করা হয়েছে।
নতুন নার্সিং কলেজগুলোতে উল্লেখিত পদ সৃষ্টি করা হলেও নতুন এই সাতটি নার্সিং কলেজে পদ সৃষ্টি কেন হচ্ছে না—এর কোনো সদুত্তর কেউ দিতে পারেনি। মূলত আমলাতান্ত্রিক জটিলতা তা আটকে আছে। দ্রুত পদ সৃষ্টির করার বিষয়টি মনিটরিং করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। গত বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নবনির্মিত ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল’ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চিকিত্সা সেবায় এখনো চিকিত্সক-নার্সের অভাব রয়েছে। সরকার গত ১৩ বছরে ১৮ হাজার ডাক্তার ও ২০ হাজারের বেশি নার্স নিয়োগ দিয়েছি। এখন দেশে প্রায় ৪৭ হাজার নার্স মানুষের সেবা দিচ্ছে। নার্সিং শিক্ষা যাতে আরো সহজ হয় এবং মানুষ আসতে পারে সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডিপ্লোমা নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে।
বর্তমান সরকার নার্সিং সেক্টরের উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন। ২০০৯ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নার্সিং শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে আটটি নার্সিং ইনস্টিটিউটকে নার্সিং কলেজে রূপান্তর করেন। এন্ট্রি পয়েন্টে সিনিয়র স্টাফ নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দেন। তিন ধাপে এ পর্যন্ত মোট ৬৭১ জন নার্সিং কর্মকর্তাকে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। নার্সিং শিক্ষা ও সেবা কার্যক্রমকে শক্তিশালী ও গতিশীল করতে অধিদপ্তরে উন্নীত করার সঙ্গে সঙ্গে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের জন্য মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত মহাপরিচালকসহ ১৬ ক্যাটাগরিতে ৭৭টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়। ৩ হাজার মিডওয়াইফারি পদ সৃজন করা হয়। সারা দেশের স্বাস্থ্যসেবা ও নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩২ হাজার ৫৪৭ জন নার্স, ১ হাজার ১৪৯ জন মিডওয়াইফ ও ৮৭৬ জন নন-নার্সিং কর্মকর্তা ও কর্মচারী সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত আছেন। ৩৮টি সরকারি নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯৭৫টি আসনে তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্স চালু করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক এম পি, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব জনাব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তারসহ সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহযোগিতার কারণে দেশের নার্সিং সেক্টরের বিভিন্ন হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজে সমুহে নতুন নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছে। ১০ হাজার নার্স এবং ৫ হাজার মিডওয়াইফাই পদ সৃজন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সভাপতি মোহাম্মদ কামাল হোসেন পাটওয়ারী ও স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের মহাসচিব মো. ইকবাল হোসেন সবুজ।