সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেক্ট্রিক্যাল
অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের লাশ
উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় আবরারের পিতা বুয়েটের ১৯ জন শিক্ষার্থীর
বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ
হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ১৯ জনকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গ্রেপ্তার করে
আইনের আওতায় নিয়ে আসে। গ্রেপ্তারকৃত প্রত্যেক আসামী হত্যার সাথে
সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত প্রত্যেককে সাময়িকভাবে
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেছে বুয়েট প্রশাসন। সেই সাথে আন্দোলনরত
শিক্ষার্থীদের দাবিও মেনে নিয়েছে বুয়েট প্রশাসন। এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের
নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের দাবি পূরণের পর যখন শিক্ষার্থীরা ঘরমুখো, তখন আবরার হত্যাকাণ্ডের ইস্যুকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যেতে উঠেপড়ে লেগেছে বিএনপি। আবরার ফাহাদের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন বেগম জিয়ার উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান। বেশ কয়েকটি গাড়িবহরে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রওনা হওয়ার পর কুষ্টিয়ার লালন শাহ সেতুর সামনে তাদের গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। এসময় কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) এস এম আল বেরুনী এসময় আমানউল্লাহর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সেফটি সিকিউরিটি পারপাসে আমরা আপনাকে অ্যালাও করছি না। আপনি সামনে ঘুরে ব্যাক করেন।’ আমানউল্লাহ নিজের প্রভাব খাটিয়ে বলেন, ‘আমি চারবার এমপি ছিলাম, দুবার মন্ত্রী ছিলাম। কেন আমাকে যেতে দেবেন না কোন সাহসে?’
উল্লেখ্য, বুয়েটের ঘটনায় যখন সারাদেশ তোলপাড় ছিল তখন মাঠে দেখা যায়নি বিএনপিকে। আবরারের তিন দফা জানাজার একবারও পাশে দেখা যায়নি বিএনপিকে। ঘটনার পর সবাইকে যখন গ্রেফতার করা হয় আর দেশের সার্বিক পরিস্থিতি যখন শান্ত- তখনই বিএনপি উঠে-পড়ে লেগেছে আবরারের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে। বুয়েটের শিক্ষার্থীদের সাতদিনের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিতেও ছাত্রদলকে কাজে লাগাতে চেয়েছিলো বিএনপি। সরকারের তড়িৎ ব্যাবস্থায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আবরারের ছোটভাই তার ফেসবুকে আইডিতে পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আবরারের জন্যে সমাবেশ না করতে। তারপরও বিএনপির এই ‘সহানুভূতি’ কেন- এটি এখন সর্বমহলেই বেশ আলোচিত বিষয়।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, লন্ডনে অবস্থারত তারেক জিয়ার নির্দেশেই এমন উল্লাহ আমানের নেতৃত্বে বিএনপির ওই দল আবরারের বাড়ি যাবার চেষ্টা করে। ছাত্রদের আন্দোলনকে উৎরে দিতে আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন থাকবে, এরকম প্রস্তাব দেয়াই ছিল বিএনপির মূল লক্ষ্য।