নিউজ ডেস্ক:
দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং কমাতে শিল্পাঞ্চলভিত্তিক সাপ্তাহিক ছুটি কার্যকর করার চিন্তা করছে সরকার। এটি বাস্তবায়িত হলে সপ্তাহের ভিন্ন ভিন্ন দিনে পৃথক পৃথক শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলো বন্ধ থাকবে। সরকারের এ পরিকল্পনার সঙ্গে ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীরা একমত হয়েছেন। চলতি সপ্তাহেই এটি কার্যকর করা হতে পারে।
গতকাল রবিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীতে বিদ্যুৎ ভবনে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকশেষে সরকারের এ পরিকল্পনার কথা জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বৈঠকে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিটিএমএ ও বিকেএমইএসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকশেষে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন শিল্পাঞ্চলে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি কার্যকর আছে। একদিনে সব এলাকায় ছুটি না দিয়ে, যদি রেশনিংয়ের মাধ্যমে একেক দিন একেক এলাকায় ছুটি চালু করা যায় তাহলে বিদ্যুতের কিছুটা সাশ্রয় হবে। এতে করে লোডশেডিং কিছুটা কমে আসবে। শিল্প মালিকরা এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। তিনি আরো জানান, আগামী মাস থেকে লোডশেডিং কমানোর চেষ্টা করছে সরকার। অক্টোবরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে দৈনিক ৪৯০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। আমরা বলেছি, কেবল ঢাকাভিত্তিক নয়, সারা দেশেই যেন এরকম ছুটি কার্যকর করা হয়।
বিকেএমইএর সহসভাপতি ফজলে শামীম আহসান জানান, একসময় যখন নিয়মিত লোডশেডিং হতো তখন এ ধরনের একটি ছুটির ব্যবস্থা চালু ছিল। আমরা বলেছি, প্রয়োজনে সে ধরনের সূচি আবার চালু করা হোক। তাদের ডায়িং ও স্পিনিং ফ্যাক্টরিকে কিছুটা ছাড় দেওয়া যায় কি না, সেই প্রস্তাবও করা হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জানান, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে যেসব কারখানা চলে তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের সিদ্ধান্ত কার্যকর নাও হতে পারে। বৈঠকে উপস্থিত বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, কোন শিল্প এলাকা কবে বন্ধ থাকবে তা কিছুদিন পরে নির্ধারণ করা হবে। অথবা ২০১০ সালের আগে যে দিনগুলোতে যে শিল্প এলাকা বন্ধ ছিল তা ফের বলবৎ করা যেতে পারে।
গত এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশ জুড়ে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের মধ্যে শিল্পাঞ্চলগুলোও রয়েছে। লোডশেডিংয়ের পূর্বনির্ধারিত শিডিউল সাধারণত দিনেরটি দিনে জানানো হয়। গতকালের বৈঠকে এটি অন্তত দুই দিন আগে জানানোর অনুরোধ করেছেন ব্যবসায়ীরা। এর আগে গত রমজানে শিল্প-কারখানাগুলোতে প্রতিদিন চার ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ-ব্যবহার বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দিয়েছিল পেট্রোবাংলা। ঐ নির্দেশনা ১৫ দিন কার্যকর করা হয়েছিল। বর্তমানেও অনেক এলাকায় অনানুষ্ঠানিক গ্যাস রেশনিং চলছে বলে জানিয়েছেন একাধিক ব্যবসায়ী।