নিজস্ব প্রতিবেদক, সিংড়া:
তুচ্ছ ঘটনায় বাড়ছে আত্মহনন। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি জঘন্যতম মহাপাপ হলেও এ আত্মহত্যা দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। কোনোভাবেই এ প্রবণতা ঠেকানো যাচ্ছে না। সাংসারিক কলহ-বিবাদ, অতিরিক্ত রাগ, ক্ষোভ, মান-অভিমানসহ নানা ঘটনায় বাড়ছে আত্মহত্যা।বিভিন্ন জায়গায় ঋণগ্রস্ত এবং ঋণের দায়ে ভারাক্রান্ত মানুষজনও বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার পথ। নাটোরের সিংড়ায় গত এক সপ্তাহে নববধূ, স্কুলছাত্র ও প্রতিবন্ধীসহ ৪টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। তাদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ২৪ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে এসব ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে।
জানা যায়, মতামত উপেক্ষা করে বিয়ে দেয়ায় গত ২৪ মে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে আলেয়া খাতুন ওরফে আলো নামের এক নববধূ। বিয়ের মাত্র ২০ দিন পরে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলার বামিহাল দশোপাড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর মেয়ে আলো। এ বছর বামিহাল রহমত ইকবাল অনার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে সে। ২৯ মে দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে আত্মহত্যা করে বিথী বেগম (২২) নামে এক গৃহবধূ। সে ঐ গ্রামের মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী। সর্বশেষ ৩১ মে উপজেলার শেরকোল আগপাড়া গ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে একই গ্রামের স্কুলছাত্র ও প্রতিবন্ধী নারীর পৃথক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
মোবাইল কেড়ে নেয়ায় মায়ের উপর অভিমান করে এসএসসি পরিক্ষার্থী মেহেদি হাসান রাব্বি (১৬) আত্মহত্যা করে। সে সিংড়া টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের এসএসসি পরিক্ষার্থী ও আগপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী আয়নাল হকের ছেলে। অপরদিকে একইদিনে নিজ শয়নকক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় একই গ্রামের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তালাকপ্রাপ্ত কোহিনুর বেগমকে (২৩)। সে ঐ গ্রামের মৃত শামসুল হকের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, কোহিনুর বেগম একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তালাকপ্রাপ্ত নারী। ৩১ মে সকালে নিজ শয়নকক্ষে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, সিংড়া উপজেলায় হঠাৎ আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে আতঙ্কে দিন পার করছে সবাই। আত্মহনন ঠেকাতে সামাজিক সচেতনতা ও পারিবারিক সম্প্রীতি বৃদ্ধির বিকল্প নেই।
আত্মহত্যা প্রসঙ্গে শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার প্রভাষক মাওলানা সাদরুল উলা বলেন, আত্মহত্যা ইসলামী শরিয়তে জঘন্যতম একটি পাপ, যার একমাত্র শাস্তি জাহান্নাম। আত্মহত্যা ইহকাল পরকাল উভয়ই ধ্বংস করে দেয়।
সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সিংড়া সার্কেল) জামিল আকতার জানান, মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের সমাজে সবচেয়ে উপেক্ষিত বিষয়। বিষন্নতা এবং জীবনের নানামুখী চাপে নিষ্পেষিত মানুষরা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে পরিবারের সকল সদস্যদের এই মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে গভীরভাবে নজর দেওয়া উচিত। পাশাপাশি নৈতিকতার শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন। এর মাধ্যমে আত্মহত্যা নিরোধ করা সম্ভব বলে আমি মনে করি।
আরও দেখুন
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ ………..চাঁপাইনবাবগঞ্জে রক্তদান সামাজিক সেবামূলক সংগঠন ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। শুক্রবার …