প্রেরকের মৃত্যু
বরাবরই আমি প্রেরকের শিখরে ছিলাম।
বিচলিত মন শশাঙ্কের সাথে বসেছে
প্রাপকের কাছে পত্র লিখবো বলে
মনে যে আজ পরিপূর্ণ কথার জলাধার।
ভালোবাসার পসরা নিয়ে বসেছি।
প্রাপকের কাছে লিখব শুধু লিখব আর লিখব।
নদীর হিল্লোলের মত যে প্রেম আমার।
ভাবনার সরোবরে ডুবেছে।
কি অপূর্ব সে সময় ছিল আমার।
ফুরসত পেলেই প্রেরক হয়ে চিঠি লিখতাম।
পোস্টকার্ড অথবা দুই টাকার হলুদ খাম পুরে।
মা-বাবা ,পরিজন ,
বন্ধুবান্ধব ও প্রেমিকের তরে।
ভালোবাসা মায়া মমতায় মাখা প্রতিশ্রুতিতে ভরা বেহুশ আলোর চিঠি।
অবসান ঘটবে প্রাপকের দীর্ঘ প্রতীক্ষার
ভালোবাসার কষ্টের সময়।
পিতার কাছে টাকা চেয়ে পত্রলেখা থেকে শুরু
জীবনের সমাচার লিখে মায়ের কাছে পত্র।
যৌবনে প্রেমিকের কাছে প্রেমের আলোর চিঠি।
জীবনের পথে পথে সিদ্ধ হতাম
প্রেরক হয়ে প্রাপকের কাছে চিঠি দিয়ে।
নিসর্গের সমস্ত অসীম সৌন্দর্য মিলে লিখতাম তোমার কাছে ভালোবাসার পত্র।
বাসনার আজ সমাপ্তি হয়েছে।
ইন্টার্নেট অর মুঠোফোনের চোখে
আমি হারিয়েছি প্রেরক হওয়ার সুযোগ।
হারিয়েছি প্রিয় ডাক পিওন,
পোস্ট কার্ড আর হলুদখাম পত্রের প্রতীক্ষায় প্রহর গোনা হয় না
মা বাবা আর পরিজনের।
পান্থজনের সখা সখি আর পথ চেয়ে বসে থাকে না।
সবশেষ ,সব আজ হারিয়ে যাওয়া সৃতি।
বাস্তবতা ও অভিন্নতায় দুটিই প্রয়োজন।
প্রেরকের অভিনয় থেকে আমি অবসর নিয়েছি।
আজ আমি শুধু কলার আর রিসিভার।
আবার প্রেরক হয়ে পত্র লিখতে চাই
পত্র জুড়ে লিখে দিতে চাই অসীম ভালোবাসার স্বর্গীয় প্রেমের কথা।
লেখক: শরিফুজ্জামান পল ব্রঙ্ক্স , নিউইয়র্ক ৬ জানুয়ারি ২০২১