নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোর পৌরসভার আবাসিক এলাকাখ্যাত হাফরাস্তা এলাকায় রাস্তা ঘেঁষে অনুমোদনবিহীন বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিং করায় আশপাশের বাড়িঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। বহুতল ভবন নির্মাণে পাইলিং কাজের সময় তীব্র ঝাঁকুনি ও কম্পনের ফলে আশপাশের বহু বাড়িঘরের ছাদ, দেয়াল, মেঝে ও কার্নিশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটলের কারণে এলাকায় ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। ভবনটি নির্মাণে কোনো অনুমতি না থাকলেও পৌর কর্তৃপক্ষ মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।অথচ ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী পৌর এলাকার ভেতরে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করার আগে অবশ্যই কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এক সময়কার ডোবা ভরাট করা হয়েছে ময়লা আবর্জনা দিয়ে এবং পাইলিংয়ের জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার না করায় তাঁদের বাড়িঘর ভেঙে যেতে বসেছে।
আজ শনিবার বহুতল ভবন নির্মাণের এলাকা শহরের হাফরাস্তা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির সেখানে ছয়তলা ভবনের নির্মাণ কাজের পাইলিং চলছে। ওই
এলাকার আশে পাশের মধ্যে বাড়িঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, আবাসিক ভবনের পাইলিংয়ের সময় ৪২০ মেট্রিক টন ওজনের প্রেশার দিয়ে মাটিতে দাবানো হচ্ছে। এতে প্রচন্ড ঝাঁকুনির কারণে উত্তর ও পশ্চিম পাশে বহু বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। দেয়াল, মেঝে ও ছাদে ছোট-বড় অসংখ্য ফাটলের দাগ ¯পষ্ট হয়ে উঠেছে।
বাসিন্দারা জানান, পাইলিংয়ের সময় তীব্র ঝাঁকুনির সৃষ্টি হচ্ছে। মাটিও কেঁপে উঠছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আতঙ্কিত অবস্থার মধ্যে তাঁদের থাকতে হচ্ছে। বাড়ির নারী ও শিশুরা এতে বেশি ভয় পাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বিদ্যুৎ অফিসের কর্মী গাজী মিয়া বলেন, সারাজীবনের পরিশ্রমের টাকা দিয়ে ৫টি কক্ষের বাসাটি নির্মাণ করেছি । পাইলিংয়ের কারণে প্রচন্ড কাঁপুনি ও ঝাঁকুনিতে ইতিমধ্যে তাঁর বাড়ির ৫টি কক্ষের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদ ও কার্নিশ ফেটে গেছে। এ ব্যাপারে গত ২৯ মার্চ নটোর পৌরসভায় লিখিত ভাবে জানানোর পরওকোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ পরিস্থিতিতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নাটোরের জেলা প্রশাসক এবং পৌরসভার
মেয়রসহ প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন স্থানীয় লোকজন।স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন জানান, “সয়েল টেস্ট ও পাইলিং কাজের ত্র“টির কারণে আমার বাসায় ফাটল দেখা দিয়েছে । তিনি পৌরকর্তৃপক্ষের কোন অনুমোদন তিনি নেননি । আমরা প্রতিবাদ করায় তিনি পুলিশ নিয়ে এসে আমাদের হুয়রানি করছে ।
পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, নিয়ম অনুযায়ী নকশা অনুমোদনের পাশাপাশি রাস্তা থেকে পাঁচ ফুট দূরে স্থাপনা নির্মাণ করার কথা। কিন্তু সাইফুল ইসলাম সেই নিয়মের তোয়াক্কা করেননি। ওই ভবন নির্মাণ করার ক্ষেত্রেও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসরণ করা হয়নি।
বাড়ির মালিক সাইফুল ইসলাম জানান,পৌর এলাকায় অনুমতি ছাড়াই অনেক বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে। তাই আমিও অনুমতি নেওয়ার কোনো প্রয়োজন মনে করিনি।নির্মাণ কাজ শেষ হলে অনুমোদন করিয়ে নিবো ।এর পরও নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরীর কাছ থেকে মৌখিকভাবে অনুমতি নিয়েছি।
শুধু সাইফুল ইসলামের ভবনটিই নয়, পৌর এলাকার যত্রতত্র অনুমতি ছাড়াই অনেক স্থাপনা গড়ে উঠছে। নাটোর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী শাহিন আলম জানান,পৌর এলাকায় অনুমোদনহীন ভাবে ভবননির্মাণ তো দূরের কথা । পাইলিং করারই কোন অনুমতি নেই । এ ধরণের কোন অভিযোগ হাতে পায়নি ।অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
সাইফুল ইসলামের ভবন নির্মাণ এবং পাইলিংএর মৌখিক অনুমতি দেওয়া প্রসঙ্গে নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী বলেন, বলেন, মৌখিকভাবে ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সাইফুল ইসলামের বক্তব্য সঠিক নয় ।
আরও দেখুন
রাণীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে ১৫ভরি স্বর্ণের ও
১০০ভরি চান্দির গহনা ছিনতাই নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,, নওগাঁর রাণীনগরে দোকান থেকে বাড়ী ফেরার পথে পথ …