নিউজ ডেস্ক: হঠাৎ করে কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ গঠনের তোড়জোড়ে বিএনপির সঙ্গে এক ধরণের অদৃশ্য টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। মুক্তি মঞ্চ গঠনের লক্ষ্যে অলির তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বিএনপির কর্মসূচিতেও তার উপস্থিতি একেবারে কমে গেছে। জানা গেছে, ২০ দলীয় জোটের শরিক থাকার পরও অলির নেতৃত্বে আলাদাভাবে ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ গঠনের পরই সৃষ্টি হয়েছে এই টানাপোড়েন।
এদিকে সম্প্রতি ২০ দলের অন্যতম শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা ভাঙনের পেছনেও অলিকে দোষারোপ করা হচ্ছে। এছাড়া জোটের আরও কয়েকটি দলকে জাতীয় মুক্তি মঞ্চে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যা ২০ দল ভাঙনের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে বিএনপি। এজন্য তার তৎপরতা এখন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে দলটি।
বিএনপি মনে করছে, অলির নতুন জোট মুক্তি মঞ্চ গঠনের তৎপরতার সঙ্গে কোনো উদ্দেশ্য আছে। জোট গঠনের উদ্দেশ্য হিসেবে নামমাত্র খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির কথা বলছে। এটি মূলত মানুষের সমর্থন আদায়ের কৌশল। কারণ খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি নিয়ে আইনি প্রক্রিয়াসহ যা যা করার দরকার বিএনপি তা তো করেই যাচ্ছে। এখানে অন্য কোনো প্লাটফরম থেকে কারও এ দাবি জানানোর দরকার পড়ে না। আর যেখানে অলি আহমদ ২০ দলীয় জোটে আছেন, এ জোটেরও তো প্রধান দাবি খালেদা জিয়ার মুক্তি। জোটে থেকেও তো তিনি এ ইস্যুতে জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারেন।
জানতে চাইলে ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, অলি আহমদের এলডিপি তো বলছে তারা ২০ দলের সঙ্গে আছে। কিন্তু জাতীয় মুক্তি মঞ্চ করার আগে এ বিষয়ে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে কোনো আলোচনা করেননি তারা। ফলে বিষয়টিকে সহজভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা ভাঙনের পেছনে জাতীয় মুক্তি মঞ্চ কারণ হতে পারে বলেও জানান তিনি।
অবশ্য জাতীয় মুক্তি মঞ্চের সমন্বয়ক ও এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলছেন, তার কোনো দুরভিসন্ধি নেই। যারা দল ভাঙনের পেছনে অন্যকে দায়ী করছে তারা নোংরামি করছে। যদিও বিএনপি তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।
তবে কর্নেল অলির প্রচেষ্টা সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায় ২০ দলের শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের বক্তব্যে। তিনি বলেন, জাতীয় মুক্তিমঞ্চে যোগ দেয়ার জন্য আমাদেরও বলা হয়েছিল। আমরা যখন অবগত হয়েছি এই উদ্যোগের সঙ্গে বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, তখন আর আমরা সাড়া দেয়নি। আমরা জোট করেছি বিএনপির সঙ্গে। বিএনপিকে বাইরে রেখে তো আমি খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন করতে পারি না।
এদিকে জাগপা বিভক্তির পর এ নিয়ে বিব্রত বিএনপিও। কোন অংশ ২০ দলে থাকবে তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েছে দলটি। তবে দুই অংশকে আবারও এক করার জন্য বিএনপির একজন নীতিনির্ধারককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, জাতীয় মুক্তি মঞ্চসহ নানা ইস্যুতে ২০ দলীয় জোটে অস্থিরতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে জোটের বৈঠকও হচ্ছে না।