নিউজ ডেস্ক:
আগামীকাল ২১ মার্চ দেশের বৃহৎ ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখানকার মানুষ মুখিয়ে আছেন প্রধানন্ত্রীর সফরের দিকে। জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসূরি দেশের প্রধানমন্ত্রী মহীয়সী নারী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে ভুলিয়ে দিয়েছেন বিদ্যুত বিভ্রাট কী। এক সময়, দশ বছর আগে; রাত-দিন মিলিয়ে ৪-৫ ঘণ্টা বিদ্যুত মিলত না। দেশের মানুষের কাছে বিদ্যুত বলতেই এক ভয়ানক ভোগান্তির নাম ছিল। রাত কাটত বিদ্যুতবিহীন, নির্ঘুম। সেইসব এখন গল্পের মতো; তবে পেছনে ফেলে আসা স্মৃতি হাতড়ে বেড়ানো তিক্ত অভিজ্ঞতার অতীত মানুষ ঘাটতে চায় না। জাতির পিতার দেশ এগিয়ে নেয়ার স্বপ্নের সেই মহান দায়িত্ব নিয়ে দুর্বার গতিতে উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ এগিয়ে চলছে। নেতৃত্ব দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ভুলিয়ে দিয়েছেন বিদ্যুতের লোডশেডিং শব্দটি। শিল্প উদ্যোক্তারা এখন আর ভোগেন না বিদ্যুত না পাওয়ার শঙ্কায়। আর বিদ্যুত বিভাগের অভাবনীয় সাফল্যের দুয়ার খুলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে। দেশের বৃহৎ এই বিদ্যুত প্লান্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
দেশের বিদ্যুত চাহিদাকে ছাপিয়ে বাড়তি উৎপাদনে এখন দেশ। আর দক্ষিণের কলাপাড়া উপজেলার রাবনাবাদ পাড়ের এই জনপদ আলোকিত হবে পায়রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে। ২০২০ সালের ১৫ মে এই পাওয়ার প্লান্টের প্রথম ইউনিট চালু করা হয়েছে। শুরু হয় উৎপাদন। জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ হচ্ছে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত। আর দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদন শুরু করে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। এখন পুরো ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত প্লান্টটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) বাংলাদেশ চায়না যৌথ বিনিয়োগে নির্মিত এই বিদ্যুত প্রকল্পটি এখন সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুত সরবরাহের জন্য। ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকিউরমেন্ট এ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (ইপিসি) এই বিদ্যুত কেন্দ্রের উন্নয়ন কাজ করেছে। যৌথভাবে যন্ত্রপাতি স্থাপন করেছে চায়না ন্যাশনাল এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিইসিসি) এবং নর্থইস্ট (নম্বর-১) ইলেকট্রিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। সরকারের দুই দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার (প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা) খরচ হচ্ছে এই প্লান্টটি নির্মাণে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নিশানবাড়িয়া ও মধুপাড়া মৌজায় ১০০২ একর জমি অধিগ্রহণ করে সেখানে ৯৮২ দশমিক ৭৭ একর জমির ওপরে এই বিদ্যুত প্লান্টটি নির্মিত হয়েছে। এখানে জমিদাতা বাড়িঘর হারা ১৩৫ পরিবারকে আগেই পুনর্বাসন করা হয়েছে। করে দেয়া হয়েছে আধুনিক সুবিধা সংবলিত পল্লী ‘স্বপ্নের ঠিকানা’। সেমি পাকা বাড়িঘরে বাস করছেন এসব পরিবার। ১৬ একর জমিতে আধুনিক সুবিধা সংবলিত ঘর দেয়া হয়েছে। সেখানে কারিগরি শিক্ষার জন্য টেকনিক্যাল স্কুল করে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, এখানকার আশপাশের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুত থেকে দশমিক শূন্য তিন পয়সা ব্যয় করা হবে। যেখানে বছরে প্রায় ২৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা জমা হবে। এখানে জমিদাতা স্বপ্নের ঠিকানা পল্লীর বাসিন্দারা উন্নয়নে অগ্রাধিকার পাবেন।