নিউজ ডেস্ক:
হাইকমিশন জানায়, বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত এ বিশেষ স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। এ স্মারকগ্রন্থে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর সিলেটে ঐতিহাসিক সফরের ছবি ও সংশ্লিষ্ট তথ্য রয়েছ।
ড. গওহর রিজভী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের পর ভূ-রাজনৈতিকভাবে বিশ্বে অনেক পরিবর্তন এসেছে। তবু একটি গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ধর্মনিরপেক্ষ সমাজের জন্য তার আদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গি আজও ৫০ বছর আগের মতোই যথার্থ ও প্রয়োজনীয়।
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আদর্শকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য বিগত ৫০ বছরে বিভিন্ন অপচেষ্টা চালানো হলেও গত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নত রেখেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে অভূতপূর্ব অগ্রগতি ও সাফল্য অর্জন করেছেন।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা বলেন, মুজিববর্ষে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন সফলভাবে ১৯৭১ সালের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক, সহনশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক আদর্শ এবং বাঙালি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ব্রিটিশ-বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মের সামনে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে। ফলে আজ ব্রিটেনে আমাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধে উজ্জীবিত তরুণ প্রজন্ম গড়ে উঠেছে।
হাইকমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য তার ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রামের সময় সিলেটসহ দেশের প্রতিটি এলাকায় বার বার ভ্রমণ করেছেন। এ স্মারকগ্রন্থে ১৯৪৭ সালে সিলেটের ঐতিহাসিক গণভোট থেকে শুরু করে ১৯৭৩ সালের জাতীয় নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত সিলেটে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সফরের অনেক ঐতিহাসিক ছবি ও তথ্য রয়েছে, যা থেকে বিশেষ করে সিলেট অঞ্চল থেকে যুক্তরাজ্যে প্রবাসী ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা অনেক কিছু জানতে পারবেন।
এ নিয়ে বিশিষ্ট কলামিস্ট এবং একুশের অমর সংগীতের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন উপমহাদেশের প্রথম রাষ্ট্রনায়ক যিনি একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণপ্রজাতন্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে রক্ষা ও সংরক্ষণের জন্য তিনি বাংলাদেশের জনগণ ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার নিরলস প্রচেষ্টায় তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ বক্তব্য রাখেন।
লন্ডন বারা অব হ্যাভেরিংয়ের মেয়র জন মাইলড বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের প্রশংসা করে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। মুক্তিযোদ্ধা, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী নেতা ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এতে লন্ডন বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর ওপর এক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিপুল সংখ্যক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিশু অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয় এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিশুরা বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।
এর আগে হাইকমিশনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পাঠের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের জন্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের শান্তি ও অব্যাহত অগ্রগতির জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।