নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, এ দেশে জাপানের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ প্রতি বছর বাড়ছে। গত ১০ বছরে বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগ বেড়েছে ৩ গুনের বেশি। স¤প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, আগামী দুই বছরে ৬৮ শতাংশ জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা প্রসারিত করতে চায়।
গতকাল বুধবার গুলশানের ওয়েস্টিনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যকার ক‚টনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ইতো নাওকি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জাপান সফর বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার একটি ভিত্তি ছিল। জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতা যেকোনও সময়ের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। অর্থনৈতিক উন্নতি এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শুভেচ্ছা বার্তায় জানিয়েছেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য খুবই আকৃষ্ট জায়গা। দুই দেশের মধ্যে এই সহযোগিতা সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে।
তিনি বলেন, আমি স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উত্তরণে বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানাই। উন্নত দেশ হওয়ার পথে বাংলাদেশকে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে। শিল্পকে বৈচিত্র্যপূর্ণ করতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে নতুন নতুন প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়ার প্রয়োজন আছে। জনশক্তির দক্ষতা বাড়ানোর প্রয়োজনও আছে। বাংলাদেশের তরুণদের উদ্ভাবনী দিকে জোর দিতে হবে। জাপানের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সেসব চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে অবহিত করতে সহযোগিতা করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এ সময় ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং প্রবৃদ্ধির জন্য প্রতিটি দেশের ক্ষেত্রে শান্তি অত্যন্ত জরুরি।
জাপানকে বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধু দেশ বলে উল্লেখ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক ও মানসিকভাবে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের সব জায়গায় জাপানের চিহ্ন রয়েছে। মাতারবাড়ি, মেট্রোরেল, আড়াই হাজার সবক্ষেত্রেই জাপান কাজ করছে। এসব প্রকল্প সম্পন্ন হলে সেগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশেষ প্রভাব ফেলবে। জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও সুন্দর ও শক্তিশালী করার উদ্যোগ রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তোলনের পর, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানো হবে। জাপানের সঙ্গেও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার খসড়া নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, রিসার্চ ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত, রিসার্চ ডিরেক্টর খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জাপানের সঙ্গে শুধু অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব নয়, ও রাজনৈতিক অংশিদারিত্ব দরকার। আগামীতে জাপানের সঙ্গে রাজনৈতিক অংশীদারিত্বের গুরুত্ব অনেক বাড়বে।