নিজস্ব প্রতিবেদক, ঈশ্বরদী:
দুই মাসের বেশি সময় ধরে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদ শূন্য রয়েছে। অধ্যক্ষ না থাকায় কলেজের প্রশাসনিক, একাডেমিকসহ বিভিন্ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ফলে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটি। একাধিক শিক্ষকের পদ শুন্য থাকায় উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রি ও ১২ বিভাগে অনার্স মিলে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মাণ সামগ্রী বালু-খোয়া স্তূপাকারে ফেলে রাখা ও শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন থাকায় শিক্ষার্থীরা বিরুপ মনোভাব প্রকাশ করেছেন। বুধবার (২ মার্চ) থেকে এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে। নতুন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় কলেজ ক্যাম্পাস মুখরিত হলেও এসব বিষয় কলেজ কর্তৃপক্ষ নজরে আনেননি বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মাণ সামগ্রী বালু, খোয়া স্তূপাকারে ফেলে রাখা হয়েছে। বাতাসে স্তূপ থেকে বালু গিয়ে শ্রেণী কক্ষগুলোর বেঞ্চ, মেঝে ধুলোবালিতে অপরিচ্ছন্ন হয়ে আছে। বালু-খোয়া ক্যাম্পাসে ফেলে রাখা সম্পর্কে জানা যায়, ৭ কোটি ১০ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে গত বছরের ৬ নভেম্বর ‘মোজাম্মেল হক সমাজী বিজ্ঞান ভবন’ নামে কলেজের ছয়তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস। উদ্বোধনের পর সামান্য কিছু করার পর কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই সময় কাজের জন্য বালু-খোয়া এনে রাখার পর এগুলো আর সরানো হয়নি ক্যাম্পাস থেকে।
এইচএসসি প্রথম বর্ষের তিন-চারজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, এই কলেজটি ঈশ্বরদীর ঐতিহ্যবাহী একটি কলেজ। ‘ক্যাম্পাসে বালু-খোয়ার স্তূপ, শ্রেণিকক্ষে ধুলোবালি, ভবনগুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ। আগে ভাবিনি ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের অবস্থা এত নাজুক।’
একজন কলেজ শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অধ্যক্ষ না থাকায় কলেজের প্রশাসনিকসহ বিভিন্ন কাজকর্ম সমাধানে বিঘ্ন ঘটছে।অনতিবিলম্বে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ দেওয়া উচিত।
কলেজ সুত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২১ জুলাই অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুর রহিমকে অন্যত্র বদলি করা হলে উপাধ্যক্ষ প্রফেসর জাকিরুল হককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়। একই বছরের ২১ ডিসেম্বর চাকুরির মেয়াদ শেষ হলে প্রফেসর জাকিরুল অবসরে যান। সেই থেকে কলেজের অধ্যক্ষের পদ শুন্য রয়েছে।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজা খাতুন বলেন, সরকারি কলেজটি ঈশ্বরদীর উল্লেখযোগ্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফলও সন্তোষজনক। কলেজে কিছু সমস্যা রয়েছে। শ্রেণীকক্ষ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখাসহ কলেজের শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করে যাচ্ছি। ক্যাম্পাসে বালু-খোয়া স্তূপাকারে রাখার বিষয়ে বলেন, কলেজে ছয়তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হলে এসব সামগ্রী এনে রাখা হয়। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য যে, ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৩ সালে। কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রী ও ১২টি বিষয়ে অনার্স কোচ চালু রয়েছে। সবমিলিয়ে ৫৮ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ৪২ জন। অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ মিলে ১৬ শিক্ষকের পদ শুন্য রয়েছে। তবে চুক্তিভিত্তিক ১২ জন শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করাচ্ছেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় সার্বিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে এক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।
আরও দেখুন
রাণীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে ১৫ভরি স্বর্ণের ও
১০০ভরি চান্দির গহনা ছিনতাই নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,, নওগাঁর রাণীনগরে দোকান থেকে বাড়ী ফেরার পথে পথ …