নিউজ ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বিচারিক কাজে অগ্রাধিকার দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নারী আইনজীবীদের বিশেষ সম্মান দেখিয়েছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
আজ মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিচারিক কাজের শুরুতে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের বেঞ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নারী আইনজীবীদের মামলা শুনানির ঘোষণা দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বসার পর শুরুতেই আদালত বলেছেন, নারী দিবস উপলক্ষে আজ নারী আইনজীবীদের মামলাগুলো আগে শুনবেন। নারী আইনজীবীদের মামলার শুনানি শেষে আদালতের সময় থাকলে পুরুষ আইনজীবীদের মামলা শুনবেন।
আদালতে গিয়েও দেখা গেছে, আদালতের প্রথমার্ধের কার্যক্রমে নারী আইনজীবীরা অগ্রাধিকার পাচ্ছেন।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডাব্লিউইএফ) গত বছর ৩০ মার্চ প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে নারী-পুরুষের সমতার দিক থেকে বিশ্বে ১৫৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৫তম। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে প্রথম অবস্থানে। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে সপ্তম।
বাংলাদেশের নারীরা আজ সচিব, বিচারক, সশস্ত্র বাহিনীসহ সব গুরুত্বপূর্ণ পদে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। আত্মকর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা হিসেবে বিশ্বে অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তবে বিচারিক কাজে নারীর অংশগ্রহণ বা ভূমিকা এখনো প্রত্যাশা মতো নয় বলে মনে করছেন অনেকে। বিশেষ করে উচ্চ আদালতে নারী বিচারকের সংখ্যা গত দুই বছরে কমেছে। আর ২০১১ সালের আগে সর্বোচ্চ আদালত অর্থাৎ আপিল বিভাগে এবং ২০০০ সালের আগে উচ্চ আদালত অর্থাৎ হাইকোর্টে কোনো নারী বিচারকই ছিলেন না।
তবে দেশের অধস্তন আদালতে নারী বিচারকের সংখ্যা বেড়েছে। ৪৬ বছর আগে দেশে নারী বিচারক ছিলেন মোটে একজন। বর্তমানে সর্বোচ্চ আদালত মিলিয়ে ৫৬৪ জন নারী বিচারক বিচারকাজে নিয়োজিত।
নারী দিবস উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্টের নারী আইনজীবীদের সংগঠন ‘উইমেন লইয়ার্স অব বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট’ মঙ্গলবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট গার্ডেনে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয়েছে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে।
এ ছাড়াও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিনসহ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা অংশ নেবেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটিও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
১৯১০ সালের ৮ মার্চ নিউ ইয়র্কের সেলাই কারখানার নারী শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রতি সম্মান জানাতে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়ে থাকে। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সাল থেকে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন শুরু করে।