সোমবার , ডিসেম্বর ২৩ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / এখনই বন্ধ হচ্ছে না কোভিড হাসপাতাল

এখনই বন্ধ হচ্ছে না কোভিড হাসপাতাল

নিউজ ডেস্ক:

দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ পেরিয়েছে। ভাইরাসের দাপটও কমতে শুরু করেছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলো এখনই বন্ধ হচ্ছে না। সংক্রমণের নিম্নমুখী প্রবণতায় আরও কিছুদিন অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে হাসপাতালগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম বাড়ানো হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও রাজধানীর একাধিক কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে এমন তথ্য জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. ফরিদ উদ্দীন মিয়া বলেন, ‘দেশে দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে করোনার সংক্রমণ চলছে। এর মধ্যে কখনও সংক্রমণ বেড়েছে কখনও বা কমেছে। ইতোমধ্যে সংক্রমণের তিনটি ঢেউ পার হয়েছে।

‘মাঝখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় চলে এসেছিল। তখন কোভিড হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছিল। যা এখনও বহাল রয়েছে। ওমিক্রনের প্রভাবে তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়। রোগী বাড়ায় হাসপাতালগুলো শুধু করোনা আক্রান্তদেরই সেবা দিচ্ছিল। এখন সংক্রমণ ফের নিম্নমুখী হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী টানা দুই সপ্তাহ দৈনিক শনাক্ত পাঁচ শতাংশের নিচে থাকলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলা যায়। ফলে ভাইরাসটির চলমান নিম্নগামী পরিস্থিতি আরও কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে পৃথক একটি ইউনিট রেখে সাধারণ রোগীদের সেবা কার্যক্রম চালু করা হতে পারে। প্রেষণে থাকা চিকিৎসক নার্সদের আগের কর্মস্থলে পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে।’

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক কর্নেল নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালটি কোভিড ডেডিকেটেড হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অন্যান্য সেবা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। মাঝখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বর্হিবিভাগ সাধারণ রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণে তৃতীয় ঢেউ আসায় শুধু করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছিল। এখন কমতে থাকায় আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি।’

তিনি বলেন, ‘ফেব্রেুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জরুরি বিভাগে দৈনিক ৩০০ জনের মতো রোগী আসতো, ভর্তি প্রায় আড়াইশ জনের মত ভর্তি হতো। বর্হিবিভাগে তিনশ রোগী সেবা নিত। এখন আইসিইউ, এইচডি ও অন্যান্য বিছনা মিলে দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ জনের মত সেবা নিচ্ছে। ফলে আগামী ২ মার্চ থেকে পুরোদমে সব বর্হিবিভাগ ও আন্তবিভাগ সেবা চালু হবে। এ লক্ষ্যে হাসপাতালকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। পাশাপাশি করোনা ওয়ার্ড থাকবে।’

উত্তরার কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সিহাব উদ্দিন বলেন, ‘অন্যান্য হাসপাতালের মত এখানেও রোগী ভর্তি কমছে। তবে পাশে বিমানবন্দর থাকায় প্রতিদিন সেখান থেকে ৪০-৫০ জন করোনা সন্দেহভাহন ব্যক্তিদের হাসপাতালের বর্হিবিভাগে পাঠানো হচ্ছে। ট্রায়াজ (শারীরিক অবস্থা পর্বেবেক্ষণ) পদ্ধতিতে তাদের সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে ভর্তি করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ২০০ বেড কোভিড ডেডিকেটেড। এর মধ্যে আন্তঃবিভাগে দৈনিক গড়ে ২০ জনের মত রোগী ভর্তি থাকছে। রোগী কমে যাওয়ায় ১ মার্চ থেকে সাধারণ রোগীদের সেবা কার্যক্রম আমরা চালুর চিন্তাভাবনা করছি। তবে এ বিষয়ে স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে নির্দেশনা এখনো আসেনি। এছাড়া এখানে প্রেষণে আসা চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য জনবলের ব্যপারে যে সিদ্ধান্ত হবে সেটা জানানো হয়নি। নির্দেশনা আসলে সেভাবে কার্যকর করা হবে।’

মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, ‘সংক্রমণ নিন্মগামী হওয়ায় দৈনিক তিন-চারজন করে করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছে। এখন আইসিইউতে ৬ জন সহ মোট ৩০ জন ভর্তি রয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে গড়ে ৩০ জন ভর্তি থাকছে। এছাড়া ২২৫ জনের মতো নন-কোভিড রোগী আছে। বর্হিবিভাগ চালু রয়েছে। এন্টিজেন টেষ্টসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সংক্রমণ কমলেও আমাদের আগের মত ১৫০ বিছানা প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি আইসিইউ ও এইচডিইউ বেড রয়েছে। অফিসিয়ালি ডিক্লিয়ারেশন না আসা পর্যন্ত কোনকিছুই কমানো হবে না।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আহসানুল কবীর সুমন, ‘ডেল্টার মতো এবার হাসপাতালে ভতি হওয়ার প্রবণতা অনেক কম ছিল। সেই কারণে তৃতীয় ঢেউয়ে হাসপাতালে তেমন কোনো চাপ পড়েনি। গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন একটা থেকে দুইটা রোগী আসছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল মাত্র ১০ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।’

করোনা নিয়ন্ত্রণে আসছে, এই হাসপাতালে কী কাজে ব্যবহার হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করলেও এটি বন্ধের কোন নির্দেশনা আসেনি। ফলে বিছানা ছাড়া অব্যবহৃত মেডিক্যাল সরঞ্জাম সচল রাখতে নিয়মিত স্টোররুমে নিয়ে রিসাইকেল করা হচ্ছে। এ কাজে চিকিৎসক নার্স ও সংশ্লিষ্টরা সহায়তা করছেন।’

ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত করোনা সেবায় গঠিত দেশের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল। এই হাসতাপালে রোগী সেবার ২০০ জন চিকিৎসক নিয়োজিত। স্বাস্থ্যকর্মীও প্রায় এমন। তবে এই হাসপাতালে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তি রয়েছে মাত্র ৫০ জন। প্রতিদিন গড়ে ১০ জন রোগী আসছেন। তার অধিকাংশই গ্রাম থেকে।

এই হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার ডা. ফাতেমা তুজ জোহারা জ্যোতি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১ হাজার শয্যা হাসপাতালে বর্তমানে ৫৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ১০ জন। এ সময় ৬ রোগী মারা গেছে। আইসিইউতে আছেন ৯ জন। এই হাসপাতালে যেসব রোগীগুলো আসে অনেক জটিল পরিস্থিতি নিয়ে।

‘করোনা নিয়ন্ত্রণে আসছে, এই হাসপাতাল কিভাবে চলবে এটার কোনো পরিকল্পানা এখনও করা হয়নি। সরকার যেভাবে নির্দেশনা দেবে সে ভাবেই কাজ করা হবে। রোগীর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’

আরও দেখুন

নাটোরে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত-১ আহত-৯

নিজস্ব প্রতিবেদক ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,নাটোর বগুড়া মহাসড়কের ডালসড়ক এলাকায় ৬টি ট্রাকের সংঘর্ষের ঘটনায় হোসাইন নামের এক ট্রাক …