নিউজ ডেস্ক:
দেশের স্বাস্থ্যসেবায় যুক্ত হচ্ছে নতুন পালক। যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি অ্যান্ড সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল। এই হাসপাতালে এক ছাতার নিচে মিলবে সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা। রাজধানীর শাহবাগে ১২ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালটির নির্মাণকাজ, যন্ত্রপাতি কেনার কাজ শতভাগ শেষ। সার্বিক কাজ সম্পন্ন করে আগামী জুনে হাসপাতালটি উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্পের পরিচালক স্বনামধন্য সার্জন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক ডা. মো. জুলফিকার রহমান খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘চাকরি জীবনের ৪০ বছরে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুরের বিখ্যাত হাসপাতালে কাজের অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমাদের দেশে রোগীদের সেবার জন্য রোগ ভেদে বিভিন্ন জায়গায় ছুটতে হয়। এই ভোগান্তি নিরসনে স্বপ্ন ছিল সব সেবা সংবলিত বিশ্বমানের হাসপাতাল গড়ার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক চেষ্টায় দেশের স্বাস্থ্য খাতে পরিবর্তনের জোয়ার নিয়ে আসবে এই হাসপাতাল। পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করে গড়ে তোলা হচ্ছে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা। হাসপাতাল ইনফরমেশন সেন্টারের (এইচআইএস) মাধ্যমে রোগীর সব তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। এই হাসপাতালে পাঁচটি ভিন্ন সেন্টারের মাধ্যমে দেওয়া হবে সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা। এক ছাতার নিচে সব সেবা পাবেন রোগী।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালে সেবা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ১৪০ জনকে কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৫০ জনের প্রশিক্ষণ চলছে, এপ্রিলে আরেক ব্যাচ যাবে। অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস, সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের আদলে এই হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। হাসপাতালে সেবার মান ঠিক রাখতে জয়েন্ট কমিশন ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) অ্যাক্রিডেশন নিশ্চিত করতে হবে। এর সঙ্গে ন্যাশনাল অ্যাক্রিডেশন বোর্ড ফর হসপিটাল অ্যান্ড হেলথ কেয়ার-এর (এনএবিএইচ) অনুমোদন চালু করেতে হবে। হাসপাতালের কাঠামোর কাজ পুরোপুরি শেষ। চট্টগ্রাম বন্দরে যন্ত্রাংশের একটা চালান চলে এসেছে। এগুলো সংযোজনসহ যাবতীয় কাজ মে মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। জুনে উদ্বোধন করে রোগী ভর্তি শুরু করা যাবে এ হাসপাতালে। এটি চালু হলে বিএসএমএমইউর শিক্ষা, চিকিৎসা এবং গবেষণা কার্যক্রম আরও গতিশীল ও উন্নত হবে।’ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিএসএমএমইউর উত্তর পাশে ৩ দশমিক ৮ একর (প্রায় ১২ বিঘা) জমির ওপর এই সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১২ সালে। ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ১ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের অনুমোদন মেলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটিতে। ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ হাসপাতাল নির্মাণে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার থেকে ১ হাজার ৪৭ কোটি টাকা ঋণ সহযোগিতা পাওয়া গেছে। নির্মাণকাজ সম্পন্ন করছে হুন্দাই করপোরেশন কোরিয়া। হাসপাতালের নকশা করেছে সানজিন ইঞ্জিনিয়ারিং কোরিয়া। সুপরিসর ১২ তলা ও তিনটি বেজমেন্ট নিয়ে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি অ্যান্ড সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি হবে ৭৫০ শয্যার। এর বহির্বিভাগ থেকে প্রতিদিন ৮ হাজার রোগী সেবা পাবে। এতে থাকছে ১০০টি আইসিইউ বেডসহ ইমার্জেন্সি বেড। পাঁচটি ভিন্ন সেন্টারে থাকছে জরুরি চিকিৎসাসেবা, মা ও শিশু কেন্দ্র, কার্ডিওভাসকুলার সেন্টার, হেপাটোবিলিয়ারি অ্যান্ড গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি সেন্টার ও কিডনি ডিজিজ সেন্টার। ১২টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, যেখানে বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিস্থাপনসহ উন্নত মানের সার্জারি সম্পন্ন হবে। হাসপাতাল নির্মাণ ও উন্নত প্রশিক্ষণ- এই দুই ভিত্তিতে হাসপাতাল প্রকল্পটিকে সাজানো হয়েছে। অধ্যাপক ডা. মো. জুলফিকার রহমান খান জানান, এই স্পেশালাইজড হাসপাতালে থাকছে ৭৩টি কেবিন। এর মধ্যে ভিভিআইপি ছয়টি, ভিআইপি ২১টি এবং বাকিগুলো হবে ডিলাক্স কেবিন। এ ছাড়া ওয়ার্ড, সার্জিক্যাল ইনটেনসিভ কেয়ার, মেডিকেল ইনটেনসিভ কেয়ার, করোনারি কেয়ার ইউনিট, নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট এবং পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট থাকবে এই হাসপাতালে। এই স্পেশালাইজড হাসপাতালে সেবা নিতে এসে রোগীকে অন্য কোনো জায়গায় যেতে হবে না। হাসপাতালের ভিতরেই থাকবে ব্যাংকিং সুবিধা, ফার্মেসি, চারটি ক্যাফেটেরিয়া। থাকবে ১৬টি এলিভেটর ও একটি এস্কেলেটর, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাপনা, হিটিং, ভেন্টিলেশন ও এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেম। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হবে
আরও দেখুন
রাণীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে ১৫ভরি স্বর্ণের ও
১০০ভরি চান্দির গহনা ছিনতাই নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,, নওগাঁর রাণীনগরে দোকান থেকে বাড়ী ফেরার পথে পথ …