নিউজ ডেস্ক:
চলতি সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের সম্ভাব্য চাহিদা ১৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। সেচ মৌসুমে গ্যাসের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চাহিদা প্রতিদিন ১ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট, ফার্নেস অয়েলের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চাহিদা ৭০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ও ডিজেলের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চাহিদা ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। সেচ মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে সভায়।
রবিবার (৩০ জানুয়ারি) অনলাইনে সেচ মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত আন্তমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ছাড়া বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) চেয়ারম্যান সেলিম উদ্দিন, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান ও পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বক্তব্য রাখেন।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে সেচ মৌসুম শুরু হয়, যা ৩১ মে পর্যন্ত চালু থাকে। এ সময় বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সভায় জানানো হয়, গত সেচ মৌসুমে মে মাসে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৪০৯৭ মেগাওয়াট, ২০২০ সালে যা ছিল ১১৯৭৭ মেগাওয়াট। শুধু সেচের জন্য ২০২১ সালে বিদ্যুৎ লেগেছে ২৩১৫ মেগাওয়াট, যা ২০২২ সালের জন্য প্রাক্কলন করা হয়েছে ২৩৭৫ মেগাওয়াট।
সভায় নসরুল হামিদ বলেন, সেচ মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের জোগান অব্যাহত রাখবে। সুষ্ঠুভাবে লোড ব্যবস্থাপনা করা হবে। তিনি বলেন, প্রায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে। বিদ্যুতের চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেচ মৌসুমে এই চাহিদা আরও বাড়ে। চাহিদা যতই বাড়ুক নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চাহিদা মতো প্রাকৃতিক গ্যাস এবং জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করেন তিনি।
সভায় জানানো হয়, চলতি সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গ্যাস, ফার্নেস অয়েল ও ডিজেল সরবরাহ বৃদ্ধি করা, যেসব গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নির্বিঘ্নে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম, সেসব বিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহ করা, চলতি সেচ মৌসুমে জ্বালানি পরিবহনের ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএ ও বিপিসি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) যোগাযোগ করে জ্বালানি পরিবহন নিশ্চিত করা, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি), পেট্রোবাংলা ও বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রসমূহে জ্বালানি তেল, গ্যাস এবং কয়লার সুষ্ঠু সরবরাহ নিশ্চিত করা, সেচে পানির সাশ্রয়ী ব্যবহারের লক্ষ্যে অল্টারনেট ওয়েট অ্যান্ড ড্রাই পদ্ধতি জনপ্রিয় করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো, সেচপাম্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য গ্রিড উপকেন্দ্র, সঞ্চালন লাইন, বিতরণ লাইন ও উপকেন্দ্রসমূহ সংরক্ষণ ও মেরামত কাজ জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করা, ওভারলোডেড সাবস্টেশনসমূহ ও সঞ্চালন লাইন আপগ্রেডেশনের কাজ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে ন্যূনতম ২ মাসের উৎপাদন সক্ষমতা রাখার জন্য জ্বালানি তেলের মজুত নিশ্চিত করা, সেচ মৌসুমে জরুরি সময়ে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা কোম্পানিগুলো ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা নির্ধারণ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে লাইভ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা, সেচপাম্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ তদারকির জন্য মনিটরিং কমিটি গঠন এবং গঠিত মনিটরিং কমিটির কার্যক্রম জোরদার করা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচনাকালে বিপিসি, পেট্রোবাংলা, জননিরাপত্তা বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিসি প্রতিনিধিরা তাদের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরেন।