নিউজ ডেস্ক : অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা ও এর আদ্যোপান্ত নিয়ে বাংলাদেশে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বলা যায়, জুয়া ও ক্যাসিনো এখন টক অফ দ্যা কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসায় যারা ধরা পড়েছেন তারা প্রত্যেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত। যারা অতীতে বিএনপির রাজনীতি করতেন বলেও জানা গেছে।
বাংলাদেশে ক্যাসিনো ব্যবসার ইতিহাস ঘাটতে গিয়ে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। জানা গেছে, এই ক্যাসিনো ব্যবসা শুরু হয় ২০০১ সালে, যখন বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হয়। এরপর ১/১১ সরকার যখন দায়িত্ব গ্রহণ করে, তখন হাওয়া ভবনে অপারেশন পরিচালনা করা হয়। সেই হাওয়া ভবনে তখন অন্তত ৫টি ক্যাসিনোর উপকরণ পাওয়া গিয়েছিল। মূলত বিএনপির আমলে এই হাওয়া ভবন নামের ক্যাসিনো ছিলো সবচেয়ে আলোচিত। তারেক রহমানের বিশেষ নির্দেশে পরিচালিত হতো এই ক্যাসিনো।
শুধু তারেক রহমানই নয়। ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত ছিলেন বিএনপির আরো অসংখ্য সিনিয়র নেতা। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বিএনপি নেতা সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা আর তার নেতৃতেই শুরু হয় ক্যাসিনো ব্যবসা। সাদের হোসেন খোকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসও মতিঝিলের ক্লাবগুলো দখল করেন। তখন আরামবাগ ক্লাব এবং ওয়ান্ডারার্স ক্লাবেও ক্যাসিনো ভিত্তিক জুয়া শুরু করা হয় মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে।
খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব মোসাদ্দেক আলী ফালুও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসা শুরু করেছিলেন। ১৯৯১-৯৬ সালে বিএনপির আমলে একমাত্র আবাহনী ক্রীড়া চক্র ছাড়া অন্য সবগুলো ক্লাবেই ক্যাসিনোর আসর বসানো হয়েছিলো। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও এই ক্লাবগুলোর নিয়ন্ত্রণ ছিলো বিএনপির হাতেই। এভাবেই বিএনপির হাত ধরে বাংলাদেশে ক্যাসিনো কালচারের আবির্ভাব ঘটে। পরবর্তীতে বিএনপির পতনের পর ২০১৪-১৫ সালে ক্যাসিনোগুলোর নিয়ন্ত্রণ চলে যায় আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের হাতে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, এনামুল হক আরমান, এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া এবং শফিকুল আলম ফিরোজ।
উল্লেখ্য, আবুল কাশেম ( গোল্ডেন ক্লাবের মালিক) ২০১৫ সালের দিকে কিছু সংখ্যক নেপালির সহায়তায় ঢাকা গোল্ডেন ক্লাবে আধুনিক ক্যাসিনো ব্যবসা শুরু করে।
তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য ৩ জন নেপালি নাগরিক (রাজকুমার, ছোট রাজকুমার ও দিনেশ শর্মা) এর সাথে ক্যাসিনো ব্যবসা নিয়ে সম্রাট গোপন বৈঠক করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসা জোরালোভাবে শুরু হয়।