নিউজ ডেস্ক:
রোববার নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এ জেটিসহ ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্দরের চারটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন।
বন্দরের এক নম্বর জেটির উজানে সার্ভিস জেটিটি নির্মাণ করা হয়েছে। নগরীর বারিক বিল্ডিং মোড় সংলগ্ন চ্যানেলে ২২০ মিটার দীর্ঘ এ জেটি স্থাপনে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮৩ কোটি টাকা।
বন্দরে আসা জাহাজগুলোকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি বন্দরের নিজস্ব নৌযানগুলো এখানে বার্থিং করা থাকবে। এ জেটি নির্মাণের ফলে সেবাবিষয়ক অনেক কাজ গতি পাবে বলে জানায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ জেটিতে বন্দরে আসা জাহাজে বিভিন্ন সেবাদাতা নৌযান, পানি সরবরাহকারী জলযান, খনন যন্ত্র, তেলসহ সাগরের বর্জ্য অপসারণকারী নৌযান, টাগবোট রাখা থাকবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, এটিই বন্দরের প্রথম সার্ভিস জেটি। এতদিন ১৩ নম্বর ঘাটের ওখানে ডক জেটির মাধ্যমে এসব সেবা দেওয়া হতো।
রোববার প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্দরে নিউমুরিং ওভারফ্লো ইয়ার্ড উদ্বোধন করা হয়।
এ ইয়ার্ড চালুর ফলে কন্টেইনার ধারণক্ষমতা আরও বেড়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
এছাড়া প্রতিমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে বন্দরের সাহায্যকারী নৌযান কাণ্ডারী ৬ উদ্বোধন করেন।
ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডে নির্মাণ করা এ টাগবোট তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এর বাইরে বন্দর স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক মানের নবনির্মিত সুমিং কমপ্লেক্স উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে চালুর জন্য কাজ চলছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের আগেই গুরুত্বপূর্ণ এ টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল ও নির্মাণাধীন পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল এবং মাতারবাড়ী সমুদ্র বন্দরের টার্মিনাল সোনালী দিনের হাতছানি দিচ্ছে।
বে টার্মিনালের অগ্রগতি প্রসঙ্গে খালিদ মাহমুদ বলেন, কার্যক্রমে ধীরগতি নয়, অনেক দূরই এগিয়েছি। এখানে জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কিছুটা দুর্বলতা দেখছি।
“চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষ কথা বলেছে। মনে হয় দ্রুত শেষ হবে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত হয়েছে, দায়িত্ব দিতে পারলেই কাজ শুরু হবে।“
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে নির্মাণ কাজ শুরুর অপেক্ষায় থাকা বে-টার্মিনালকে বলা হচ্ছে ‘ভবিষ্যতের চট্টগ্রাম বন্দর‘। এজন্য প্রাথমিকভাবে ৮৯০ একর জমি অধিগ্রহণ করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এর বাইরে বন্দর কর্তৃপক্ষের হিসাবে, সমুদ্র থেকে ভূমি পুনরুদ্ধারের পর বে টার্মিনালের জমির পরিমাণ বেড়ে হবে আড়াই হাজার একর।
বর্তমানে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের খেজুরতলার বিপরীত থেকে কাট্টলি পর্যন্ত অংশে পলি জমে ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ চর সৃষ্টি হয়েছে।
বন্দর কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘদিন থেকে আলোচিত এ বে টার্মিনাল নির্মাণ হলে দিনে-রাতে যে কোনো সময় বেশি দৈর্ঘ্যের ও ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো যাবে।
ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে একটি ট্রায়াল রান হয়েছে সফলভাবে। এটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, অভিজ্ঞতার বিষয়ও রয়েছে।
“ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে বলেছি, আরও কয়েকটি ট্রায়াল করতে চাই।“
প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম. শাহজাহানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।