সোমবার , ডিসেম্বর ২৩ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / দুই মেয়র বাসে চড়ে উদ্বোধন করলেন ঢাকা নগর পরিবহন

দুই মেয়র বাসে চড়ে উদ্বোধন করলেন ঢাকা নগর পরিবহন

নিউজ ডেস্ক:

নিজ হাতে টিকেট কেটে বাসে চেপে বসলেন ঢাকার দুই মেয়র। সেই বাস চলে গেল ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর। মাঝপথে তারা নেমে যান। তারপর তারা উভয়েই ঘোষণা দেন- ‘আজ থেকে পরিবহনে বিশৃঙ্খলা দূর করতে বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চালু হলো ঢাকা নগর পরিবহন। এ বাস চলবে প্রতিদিনই ঘাটারচর-মোহাম্মদপুর-গুলিস্তান-মতিঝিল-সাইনবোর্ড-কাঁচপুর ব্রিজ রুটে চলবে। এভাবেই দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকার দুই মেয়র বাসে চড়ে উদ্বোধন 

করেছেন ঢাকা নগর পরিবহন। এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ঢাক পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ সাদেক খান, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ, উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

নগরবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও দাবি ছিল উন্নত বিশ্বের আদলে এ ধরনের একটি বিশেষ সিটি সার্ভিসের । কিন্তু বারবারই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবহন মাফিয়ারা। এবার সব বাধা বিঘœ ও হুমকি ধমকি উপেক্ষা করেই ঢাকার দুই মেয়র আতিকুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস মিলেমিশে চালু করতে সক্ষম হন নতুন এই সার্ভিসটি। উদ্বোধন দিনে বিআরটিসির ৩০টি ডাবল ডেকারসহ ৫০টি বাস দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। যা আগামী দুই মাসের মধ্যে ১০০-তে উন্নীত করা হবে। ঢাকা নগর পরিবহনে প্রথম দিন থেকেই ই-টিকেটিং সিস্টেম চালু করা হয়। বাস-বে, যাত্রী ছাউনিগুলোও আগেই প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া এ রুটে প্রতিটি বাসের চালক-স্টাফদের নির্দিষ্ট পোশাক থাকবে। সেই সঙ্গে তাদের আইডি কার্ড ঝোলানো অবস্থায় থাকবে গলায়।

কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত প্রায় ২৭ কিলোমিটারের রুটে বিআরটিসির বাসের পাশাপাশি সবুজ রঙের বাস নিয়ে ঢাকা নগর পরিবহন যাত্রা শুরু করেছে। এ রুটে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া পড়বে দুই টাকা ২০ পয়সা।

এ সময় মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন-আজকে বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় পরীক্ষামূলক যাত্রাপথে কার্যক্রম সূচনা হলো। পরীক্ষামূলক যাত্রাপথের শুভ সূচনা প্রয়াত মেয়র আনিসুল হককে উৎসর্গ করেছি। সবকিছুর শুরুই স্বপ্ন দিয়ে। যে স্বপ্ন দেখেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। আমি এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম সেই স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দিকনির্দেশনা, পরামর্শের আলোকে আজ আমরা পরীক্ষামূলক যাত্রাপথের শুভ সূচনা করলাম। আজকের এই নবযাত্রাকে আমি উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হককে উৎসর্গ করছি। মেয়র তাপস বলেন, আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পরিপূর্ণভাবে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করব। সেজন্য সবার সহযোগিতা এবং বিশেষভাবে ঢাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি। এ নতুন বাস সেবা ঢাকা নগর পরিবহন আপনাদের জন্য আমাদের এবং সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর বিজয়ের উপহার।

মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস পর্যায়ক্রমে পুরো ঢাকা শহরের গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনার প্রত্যয় জানিয়ে বলেন, কোন অনুমোদনহীন বাস ঢাকা শহরে চলতে পারবে না। যে যেই রুটে পারমিট নিয়েছে সেই রুটেই পরিচালনা করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে সব রুটে ঢাকা নগর পরিবহন পরিচালিত হবে। আমাদের আরও কাজ বাকি আছে। বাইরের বাসের জন্য শহরের বাইরে বাস টার্মিনাল করা শুরু করব। সেই সময় বাইরের বাস আর শহরের মধ্যে ঢুকতে পারবে না।

পরীক্ষামূলক যাত্রাপথে বাস সেবা চালুকে আজকে নব সূচনা উল্লেখ করে মেয়র বলেন-আমাদের লক্ষ্য আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে যখন এমআরটি পুরোদমে চলবে, তার সঙ্গে সঙ্গে নিচের সড়কে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং আমরা সেটা পূর্ণ বাস্তবায়ন করব। আজকে নবসূচনার মাধ্যমে আমরা প্রথম যাত্রাপথ শুরু করছি। আমাদের গাড়ি চালক, বাস চালকরা, আমাদের শ্রমিকরা এতদিন শুধু গ্লানি পেয়েছে। এতদিন শুধু অবজ্ঞা পেয়েছে। আজকে নব সূচনা হলো তারা সম্মান পেয়েছে। তারা তাদের কাপড় পেয়েছে, তারা তাদের মর্যাদা পেয়েছে, তারা তাদের নির্দিষ্ট মাসিক বেতন পাচ্ছে। এটাই আমাদের নবসূচনা। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নব দিগন্তের বাংলাদেশ।

এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এটি বাস্তবায়নের জন্য আমরা ২০টি মিটিং করেছি। করোনার মধ্যে মিটিং করেছি। ঢাকা শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে চেষ্টায় গিয়ে আমরা বুঝেছি বাস রুট রেশনালাইজেশনের কোন বিকল্প নেই। আমরা কাজ করেছি এজন্য। সবার অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ এটা পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ রুটে যারা বাস চালাবে সবার ড্রেস থাকবে। পরিচয়পত্র বাসের ভেতরে টাঙ্গিয়ে রাখতে হবে। শৃঙ্খলা আনতে বাসের বিকল্প নেই। যদি সবকিছু মেনটেইন করতে পারি, তাহলে সড়কে প্রাইভেটকারের চাপ কমবে।

আরও দেখুন

সাড়ে ৪ মাস পর হিলিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে নিহত নাইমের লাশ কবর থেকে উত্তোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক হিলি ,,,,,,,,,,,,,,,গত ৪ আগস্টে দিনাজপুরের হিলিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনেনিহত নাইমের লাশ প্রায় …