নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে আখাউড়া-আগরতলা রেল রুট পুনরায় চালু করা হবে। আমাদের যোগাযোগ বাড়াতে হবে। গতকাল ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আখাউড়া-আগরতলা রেল রুটের সবকিছুই (প্রয়োজনীয় স্থাপনা) সেখানে রয়েছে। এখন কেবল তা পুনরায় চালু করতে হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সংযোগ বাড়ানো হলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগের উন্নতি হবে। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যেকার সম্পর্ক নতুন মাত্রা লাভ করেছে। দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা, বাণিজ্য ও পর্যটন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।
দোরাইস্বামী প্রধানমন্ত্রীকে জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিজয় দিবস উদযাপনে ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফর করবেন। তিনি বলেন, এটি একটি বিশেষ বছর এবং বছরটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ভারতের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী একই বছরে বাংলাদেশ সফর করেছেন। বাংলাদেশ ভারতের কাছে অত্যন্ত প্রিয় দেশ।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমানে দুই দেশের কর্মকর্তারা ভারতীয় প্রেসিডেন্টের সফর চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছেন। কভিড-১৯-এর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই দেশকেই মারাত্মক ভাইরাস মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে হবে।
ভারতীয় হাইকমিশনার তাদের কভিড-১৯ মোকাবিলার খারাপ সময়ে চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করে সাহায্য করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর একটি অত্যন্ত দুর্লভ আলোকচিত্র হস্তান্তর করেন। আলোকচিত্রটিতে ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমানকে একজন নিরাপত্তা সদস্যকে তার সঙ্গে দুপুরের আহারের জন্য তার বাড়িতে নিতে দেখা যায়। পাশাপাশি তিনি কিছু সংবাদপত্রের ক্লিপিংস এবং অডিও ও ভিডিও সংবলিত একটি পেনড্রাইভও হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের দখলদার বাহিনীর হাতে বন্দীদশায় তাঁর ভয়াবহ দিনগুলোর কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ভারত যখন বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তখন তা তাদের জন্য মহান বার্তা ছিল। অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ মো. জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার বিনয় জর্জ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন দেবে জাতিসংঘ : বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো বলেছেন, জাতিসংঘ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন দিয়ে যাবে। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন। মিয়া সেপ্পো বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন দিয়ে যাব। শেখ হাসিনা বলেন, মানবিক কারণে আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু তারা এখন সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, কিন্তু, তাদের উচিত এখন নিজ দেশে ফিরে যাওয়া। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যে সব এনজিও বাংলাদেশে কাজ করছে সে সব এনজিও রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের নিজ দেশেও কাজ করতে পারে। বৈঠকে তাঁরা কভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিয়েও আলোচনা করেন।
নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রত্যেক সরকারি চাকরিতে বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি এবং সামাজিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। জলবায়ু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় সরকারের পাশাপাশি তাঁর দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোও বিপুল সংখ্যক বৃক্ষ রোপণ অভিযান পরিচালনা করছে। মিয়া সেপ্পো বাংলাদেশে তার অবস্থানকালে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল।